![একতরফা নির্বাচন, কম্বোডিয়ায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র](https://somoyersonglap.ae/wp-content/uploads/2023/07/Untitled-720-×-420-px-1200-×-633-px-1.jpg)
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ায় কম্বোডিয়ার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সঙ্গে বেশকিছু সহায়তা কর্মসূচিও স্থগিত ঘোষণা করেছে হোয়াইট হাউজ। কম্বোডিয়ার সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই রোববার (২৩ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কম্বোডিয়ার সাধারণ নির্বাচন অবাধ কিংবা সুষ্ঠু কোনোটিই হয়নি। এমনকি নির্বাচন শুরুর আগ থেকেই ক্ষমতাসীন সরকার বিরোধী দল, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে চাপপ্রয়োগসহ সংবিধান অবজ্ঞা করে আসছিল।
‘এই নির্বাচন আন্তর্জাতিক মানের ধারে কাছেও যায়নি। তাই যুক্তরাষ্ট্র প্রশ্নবিদ্ধ এ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও কিছু বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করলো।’
যুক্তরাষ্ট্র কম্বোডিয়ার সরকারি দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, এখনো সময় আছে। তারা চাইলে আন্তর্জাতিক মানের একটি নির্বাচন করতে পারে। বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সুযোগ এখনো চলে যায়নি।
ওয়াশিংটন আরও বলেছে, কম্বোডিয়ায় বিরোধীদলীয় বা হুন সেন সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা করার যে প্রবণতা রয়েছে, তা বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে ও কোনোভাবেই তাদের ওপর হস্তক্ষেপ করা যাবে না।
২৩ জুলাই কম্বোডিয়ার নির্বাচনে কোনো শক্তিশালী বিরোধী দল ছিল না। এমনকি, নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকেই বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়। ‘নামমাত্র’ ওই নির্বাচনে ১২০টি আসন পেয়ে আবারও জয়ী হয়েছে হুন সেনের কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি)। আর তার অনুগত বিরোধী দল ফানসিনপেক পার্টি পেয়েছে ৫টি আসন।
কম্বোডিয়ায় সিপিপির প্রধান প্রতিপক্ষ ক্যান্ডেললাইট পার্টি। দেশটির একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য এই বিরোধী দল এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। কারণ নিবন্ধনসংক্রান্ত ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে গত মে মাসে এই দলকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
কয়েক বছর আগেই রাজনৈতিক বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করতে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে নির্দয় অভিযান চালিয়েছিলেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। সেসময় বিরোধী দলের জনপ্রিয়তা বাড়ছিল ও তার ক্ষমতা হুমকির মুখে পড়ছিল। এ অবস্থায় আদালতকে ব্যবহার করে বিরোধী দলকে দমনের কৌশল নেন হুন সেন।
বিরোধীদলীয় নেতাদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করা হয়। গ্রেফতার করা হয় অনেককে। প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করার ছয় মাস পরেই নির্বাচন দেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমানে ৭০ বছর বয়সী হুন সেন ১৯৮৫ সাল থেকে কম্বোডিয়া শাসন করছেন। ৩৮ বছর ধরে ক্ষমতা ধরে রাখা এ নেতা নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দাবি করেন।
মূলত এ দীর্ঘ সময় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করেই কম্বোডিয়ার ক্ষমতা ধরে রেখেছেন হুন সেন। রাজনৈতিক বিরোধীদের কারাগারে পাঠিয়ে, নির্বাসিত করে বা তাদের সাথে আঁতাত করে ক্ষমতার শীর্ষে নিজের অবস্থান অক্ষুণ্ন রেখেছেন তিনি।