রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

৯ বছরে ১১ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, তবুও ডুবছে চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ৬ আগস্ট ২০২৩ | ৫:০১ অপরাহ্ণ আপডেট: ৬ আগস্ট ২০২৩ | ৫:০১ অপরাহ্ণ
৯ বছরে ১১ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, তবুও ডুবছে চট্টগ্রাম

‘বৃষ্টি মানেই ডুববে চট্টগ্রাম’ এটি গত কয়েক বছর ধরে নিত্যদিনের ঘটনা । বর্ষাকালে নগরবাসির দুর্ভোগ যেন কোনোভাবেই শেষ হচ্ছে না। এ জলাবদ্ধতা নিরসনে চারটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। ২০১৪ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে শুরু হওয়া এসব প্রকল্পে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা।

বড় বড় প্রকল্প নেওয়া হলেও নগরবাসীর ভোগান্তি দূর করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। উল্টো দিন দিন ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। এর কারণ হিসেবে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। এছাড়া সিটি করপোরেশন (চসিক) ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) একটি করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। একই উদ্দেশ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী এ তিন সংস্থার মধ্যে নেই কোনো সমন্বয়। প্রকাশ্যে একটি সংস্থা অন্যটিকে দোষারোপ করে। যে যার যার মতো করে কাজ করছে।

এছাড়া নগরের নালাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার হচ্ছে না। এতে নালাগুলোতে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন নালায় জমেছে ময়লা ও পলিথিনে স্তূপ। এ কারণে নালাগুলো দিয়ে যথাযথভাবে পানি নামতে পারে না। এ নালা পরিষ্কারের দায়িত্ব কার, সেটা নিয়েও দ্বন্দ্ব রয়েছে চসিক-সিডিএর মধ্যে।

গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন বাড়ির নিচতলায় পানি ঢুকেছে। বৃহস্পতিবার দেশের ভোগ্যপণ্যে অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ের বিভিন্ন দোকানে ঢুকে পানি। এতে দোকানগুলোর ফ্লোরে থাকা বিভিন্ন মালামাল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ওই বেচাকেনাও বন্ধ ছিল। এছাড়া শনিবার নগরের অন্যতম ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র রিয়াজ উদ্দিন বাজারে পানি উঠে। বারবার পানি উঠায় মালামাল পচে লোকসান হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

রিয়াজ উদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী মো. মহিউদ্দিন বলেন, বৃষ্টিপাত হলেই তিন পোলের মাথা থেকে শুরু করে বাজারে বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যায়। এ বছর মাসখানেক আগে বর্ষা শুরু হলে বৃষ্টিপাত তেমন হয়নি। তবে মাঝখানে যতবার ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে ততবার বিভিন্ন দোকানে পানি ঢুকেছে। এতে মালামাল নষ্টের পাশাপাশি ক্রেতা কম থাকায় ব্যবসারও ক্ষতি হয়েছে।

বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা মো. এহেসানুল হক বলেন, বৃষ্টি হলেই নগরের বিভিন্ন এলাকার সড়ক তলিয়ে যাচ্ছে। বাসা থেকে কর্মস্থলে যেতে কোথাও না কোথাও জলাবদ্ধতার কবলে পড়তে হয়। দীর্ঘদিন ধরে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প চলমান থাকলেও আমরা কোনো সুফল পাচ্ছি না।

সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে বড় দুটি প্রকল্পের একটির কাজ ৭০ শতাংশ এবং আরেকটির ৫৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। জলাবদ্ধতা যেখানে হচ্ছে সেটা কিন্তু নিম্নাঞ্চল। এখানকার অর্থাৎ লালখানবাজার, জিইসি মোড়, ২ নম্বর গেট, ষোলশহর, মুরাদপুর বহদ্দারহাট, প্রবর্তক মোড়, চকবাজার ও বাকলিয়াসহ বিশাল এলাকার পানি চাক্তাই খাল দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে। এই একটি খাল দিয়ে পানি চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত হবে না বিধায় মাস্টারপ্ল্যানে বারৈপাড়া থেকে কর্ণফুলী পর্যন্ত আরেকটি খাল খনন করা হচ্ছে। যেটি খনন করছে সিটি কর্পোরেশন। সেটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। কাজ শেষ হতে আরও দেড় থেকে দুই বছর লাগবে।

সম্পর্কিত পোস্ট