সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

শরণার্থী সংকটের মাঝে বোঝাপড়ার পথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ৫:১২ অপরাহ্ণ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ৫:১২ অপরাহ্ণ
শরণার্থী সংকটের মাঝে বোঝাপড়ার পথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা শরণার্থী সংকট সামলাতে বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত বোঝাপড়ায় পৌঁছাতে পারেননি। তবে এরপরও আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আশা বাড়ছে।

আর এর মাধ্যমে নতুন আইন প্রণয়ন করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

ইউরোপে শরণার্থীর ঢল সামলানোর ঝক্কি শুধু বহির্সীমানার দেশের বা প্রবেশপথের দেশগুলোর হাতে ছেড়ে দিয়ে যে নিশ্চিন্তে বসে থাকে যায় না, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি দেশগুলোও সেই সত্য বেশ জোরালো ভাবে টের পাচ্ছে। কিন্তু শুধু নিজের ঘর সামলানোকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে হাঙ্গেরির মতো কিছু দেশের সরকার।

সংকট সামলানোর সার্বিক সমাধানসূত্র হিসেবে শরণার্থীদের ন্যায্য বণ্টন অথবা শরণার্থী গ্রহণ না করার প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে আর্থিক সহায়তার বিষয়ে সম্প্রতি নীতিগত ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু সেই লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের পথে একের পর এক দেশের বাধা সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর কালো ছায়া ফেলছে।

তবে শেষ মুহূর্তে মতপার্থক্য দূর করে অনিয়মিত অভিবাসন সামলানোর প্রশ্নে সত্যি ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিশনার ইলভা ইয়োহান্সসন।

বৃহস্পতিবার ইইউ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে চূড়ান্ত ঐকমত্য সম্ভব না হলেও আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বকেয়া বিষয়গুলোর নিষ্পত্তির পর সদস্য দেশগুলো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে ইয়োহান্সসন দাবি করেছেন। জার্মানি অতীতের আপত্তি তুলে নিয়ে ‘ক্রাইসিস মেকানিজম’ সংক্রান্ত প্রস্তাব মেনে নেওয়ার ফলে সেই পথ খুলে যাচ্ছে। তবে শেষ মুহূর্তে ইতালির বিলম্বের কারণে বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ উঠছে।

শরণার্থী সংকটের বিষয়টি জাতীয়, আঞ্চলিক ও ইউরোপীয় স্তরে ভোটারদের মনে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি করায় ক্ষমতাসীন দলগুলো যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয় পদক্ষেপ দেখিয়ে চরম দক্ষিণপন্থিদের অবস্থান দুর্বল করতে চাইছে।

বিশেষ করে ২০২৪ সালে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে হাতেনাতে ফল দেখাতে মরিয়া হয়ে উঠছেন শীর্ষ নেতারা। তবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে দ্রুত আইন প্রণয়ন করলেও বাস্তবে শরণার্থী সংকট কতটা সামাল দেওয়া সম্ভব হবে, সে বিষয়ে অনেক বিশেষজ্ঞ সংশয় প্রকাশ করছেন।

ইইউয়ের পরিকল্পনা মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে বলেও অভিযোগ উঠছে। তবে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে চরম দক্ষিণপন্থি শক্তির হাত আরও শক্ত হলে শরণার্থী সংক্রান্ত নীতি আরও কঠোর রূপ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নতুন কাঠামোর আওতায় ইতালি ও গ্রিসের মতো দেশকে আর সব চাপ একাই সামলাতে হবে না। ইইউয়ের বাকি দেশগুলোও কিছু শরণার্থী গ্রহণ করবে অথবা তাদের আর্থিক ব্যয় বহন করবে। সেইসঙ্গে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন দ্রুত খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

আবেদন নাকচ হলে সেই শরণার্থীকে নিজের মূল দেশ অথবা ট্রানজিটের দেশে ফেরত পাঠানো যাবে। বর্ডার সেন্টারে শরণার্থীদের আরও বেশি সময়ের জন্য গৃহবন্দি রাখাও সম্ভব হবে। খুঁটিনাটী বিষয় নিয়ে জার্মানি ও অন্যান্য কিছু দেশের মধ্যে রফা হওয়ায় এই পরিকল্পনা বাস্তব রূপ নিতে চলেছে।

সম্পর্কিত পোস্ট