পোল্যান্ডে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা অত্যন্ত জাঁকজমকভাবে উদযাপন হয়েছে ঈদ পুনর্মিলনী। বাংলাদেশ কমিউনিটির উদ্যোগে দেশটির রাজধানী ওয়ারশতে হোটেল গ্ৰোমানের কনভেনশন হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে মেতে উঠেছিল একে অপরের সাথে। মিলনমেলাটি প্রবাসে একটি ছোট বাংলাদেশে পরিণত হয়েছিল। ঈদ উপলক্ষে সবাই বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক এমনকি প্রবাসীদের বিদেশি স্বামী ও স্ত্রীরাও বাংলাদেশি পোশাকে উপস্থিত ছিলেন।
ফজলে রাব্বীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশন করা হয় ‘রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ এই সংগীত দিয়ে। এরপর তানিয়া আফরিনের কোরিওগ্ৰাফিতে নৃত্য পরিবেশন করেন ইশমাম ও তানিয়া। সংগীত পরিবেশন করেন মাহদীসহ আরও অনেকে।
উৎসবকে ঘিরে ক্রিড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনও করা হয়েছিল। নারীদের পিলো পাসিং খেলা, ছেলেদের ফুটবল পাসিং, বড়দের মোরগ লড়াই, বাচ্চাদের মিউজিকাল চেয়ার ও ফান বক্স। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয় দেশীয় খাবার দিয়ে।
এসময় বক্তব্য রাখেন ড. মাহবুবুর রহমান ও শেখ এরশাদুর রহমান। তারা আমন্ত্রিত অতিথিদের, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের, অনুষ্ঠানে অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানদের ও আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন শরিফ আহমেদ, সিদ্দিকুর রহমান, তানিয়া আফরিন, হামিদুল ইসলাম চৌধুরী মুরাদ, নাজমুল হাসান প্রমুখ। অনুষ্ঠানকে সফল করতে আর্থিক সহযোগিতা করেছে একুশ বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান।
এসময় বক্তারা বলেন, একটা সময় পোল্যান্ডে বাংলাদেশিদের কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন ছিল যা সবার সমন্বয়হীনতার জন্য সফলতার মুখ দেখেনি। তাই অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সবাই মিলে নতুন উদ্যমে প্রবাসে একটি সুন্দর ছোট বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এর আগে পোল্যান্ডে বাংলাদেশি ছিল মাত্র দু-তিনশ। তখন সবাইকে নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব হতো কিন্তু এখন প্রায় পাঁচ হাজার বাংলাদেশি পোল্যান্ডে বসবাস করছেন। বাংলা কমিউনিটি দিনদিন বড় হচ্ছে সেদিক লক্ষ্য রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এটা সবার সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়।
তারা আরও বলেন, এমন আয়োজন প্রতিনিয়ত করার জন্য জোর দেন। এছাড়াও পোল্যান্ডে সবাই একটি কমিউনিটি গড়ে তুলতে দাবি জানান। বিশেষ করে বাংলাদেশি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে জোর দেওয়া হয়।
এই ঈদ পুনর্মিলনীতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন পোল্যান্ডে বাংলাদেশিদের তেমন কোনো আয়োজন চোখে পড়ে নি। সরকারি কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকায় সব বয়সীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান হয়ে উঠে প্রাণবন্ত। এ যেন পোল্যান্ডের বুকে এক খন্ড বাংলাদেশ!
সবশেষে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়।
