রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্নের পদ্মা সেতু

দক্ষিণাঞ্চল প্রবাসীদের‌‌‌ স্বস্তি

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২২ | ৩:৩৫ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২৫ জুন ২০২২ | ৩:৩৫ পূর্বাহ্ণ
দক্ষিণাঞ্চল প্রবাসীদের‌‌‌ স্বস্তি

দুবাই থেকে ঢাকা পৌঁছতে সাড়ে চারঘন্টা সময় লাগে। আর ঢাকা থেকে গোলাপগঞ্জ পৌঁছতে মুকুল আহমেদের লেগে যেতো সাত থেকে আট ঘন্টা। দীর্ঘদিন সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করা মুকুলের ফেরি পারাপারের দুর্ভোগ প্রতিবারই ছুটির আনন্দকে মলিন করে দিতো। মুকুলের মতো অসংখ্য প্রবাসীর সময়ের এই দীর্ঘ ব্যবধান কমাতে যাচ্ছে পদ্মা সেতু। এবার যানবাহনে চেপে পদ্মা পার হয়ে ঘরে ফিরবেন তারা। একদিকে সময়ের দূরত্ব কমছে অন্যদিকে পরিবার নিয়ে ফেরি পারাপারের মতো দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলছে তাদের। এখন ভোগান্তির বিপরীতে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়ার সময় এসেছে।

এই আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠা মুকুল আহমেদ জানান, প্রতিবারই ফেরি পার হতে ভোগান্তির শেষ ছিল না তাদের। আমিরাত থেকে ঈদ উদযাপনে আগেরদিন রওনা হলেও ঘরে পৌঁছতে পৌঁছতে শেষ হয়ে যেতো ঈদের আনন্দ। ঈদ উপলক্ষে ফেরির ভোগান্তি বেড়ে যেতো কয়েকগুণ। কোনো কোনোবার ঈদের নামাজের সময় শেষ হয়ে যেতো ফেরি পারাপারেই। সারাদিন ফেরিতে কাটিয়ে রাত দুইটা-তিনটা করে ঘরে ফিরতেন তারা। এবার পদ্মার উপর সেতু হয়েছে। গাড়ি করে সরাসরি বাড়ি পৌঁছার সুযোগ এসে গেছে। এটি শুধু আনন্দ নয় বরং তাদের জন্য বড় অর্জন।

আমিরাতের বৃহত্তর ফরিদপুর সমিতির সাধারণ সম্পদক খন্দকার মিজানুর রহমান দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের প্রাপ্তির বর্ণনা করলেন। বললেন, পদ্মা সেতু নিয়ে আমরা খুবই আশান্বিত ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সেই আশা পূরণ করেছে। ঢাকা থেকে ফরিদপুর যেতে যেখানে চার থেকে আট ঘন্টা লেগে যেতো সেই যাত্রাপথ এখন দুই ঘন্টায় নেমে এলো। শুধু যাত্রাপথ নয় পদ্ম সেতুর কল্যাণে এবার দেশের দক্ষিণাঞ্চল অর্থনৈতিক জোন হিসেবে পরিগণিত হবে। স্থানীয়দের ব্যবসা বাণিজ্যে উন্নতি হবে। প্রবাসীদের কমবে ঘরে ফেরার ভোগান্তি।

রাস আল খাইমাহ প্রবাসী বরিশালের রাহাত খাঁন বলেন, আমাদের যাতায়াতে অনেক বেশি সুযোগ তৈরি হলো। এবার দেশে ফেরার আনন্দ হবে দ্বিগুণ। ভোগান্তি বিহীন ঘরে ফেরা দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল। পদ্মাসেতু সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছে। শুধু আমাদের দুর্ভোগ নয় এবার বরিশালের পোশাকখাত ও বাণিজ্যে অগ্রগতি হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে স্থানীয় অর্থনীতি দ্রুত বিকশিত হবে।
শুধু উত্তরাঞ্চলের প্রবাসীরা নয় পদ্মাসেতু নিয়ে আপ্লুত প্রায় সকলে। নিজস্ব অর্থায়েন নির্মিত সেতুতে প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে বলেও দাবি প্রবাসীদের।

আমিরাত প্রবাসী শাফায়েত উল্লাহ বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে প্রথম থেকেই প্রবাসীদের মধ্যে উৎসব কাজ করছে। দিন যত বাড়ছে সেতু যোগে পদ্মা পারাপারের আগ্রহ ও আবেগ তত বাড়ছে। কিন্তু প্রবাসে থাকায় হয়ত সহজে এই সুযোগ পাচ্ছি না। তবে পদ্মায় ফেরি পারাপারের যে ভোগান্তি ছিল তা কমে যাওয়া নিয়ে একপ্রকার স্বস্তি কাজ করছে। তিন-চার ঘন্টার পথ সাত-আট ঘন্টায় শেষ হতো না। কোনো কোনো সময় পুরোদিন পড়ে থাকতে হতো ফেরিঘাটে। এবার ঘরে ফিরতে সেই দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হবে না ভেবেই আনন্দ লাগছে।

সম্পর্কিত পোস্ট