করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ ২ বছর পর গ্রিসে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বাংলা নববর্ষ- ১৪২৯ উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বাংলাদেশি খাবার উৎসবের সাথে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়।
রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাংলাদেশ দূতাবাস এথেন্স প্রাঙ্গণে বৈশাখী আলপনা, বৈশাখী থিমের অলংকরণ, নববর্ষের সাজসজ্জাসহ বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী সাজে সজ্জিত করা হয়। শত শত বাংলাদেশির এক মিলন মেলায় পরিণত হয় দূতাবাস প্রাঙ্গণ। বাংলাদেশি নারী-পুরুষ, শিশুরা লোকজ ও বৈশাখী পোষাকে সজ্জিত ছিলেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা বেশ কয়েকটি স্টলে বাংলাদেশি খাবার, চা-পানের দোকান, শাড়ি ও অলংকার সামগ্রী এবং আলপনা সহকারে বাংলাদেশকে ফুটিয়ে তোলেন।
গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহ্মদ ও তার সহধর্মিনী মিসেস রেবেকা সুলতানা, দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ এইদিন বিকাল তিনটায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে নিয়ে বর্ষবরণ মেলার উদ্বোধন করেন। কয়েকশত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে নিয়ে নতুন বছরে বর্ণিল সাজে সজ্জিত ব্যানার, ফেস্টুন, মুখোশ পড়ে আয়োজিত বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা করা হয়।
শেষে বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পীবৃন্দ এবং শিশু-কিশোররা বৈশাখী ও লোকজ সংগীত, কবিতা, নৃত্য ইত্যাদি পরিবেশন করেন। শতশত নারী-পুরুষের আগমনে কলকাকলিতে মুখরিত হয় দূতাবাস এবং সৃষ্টি হয় এক বর্ণিল মনোরম পরিবেশের। মেলায় আগমনকারীরা বিভিন্ন স্টলে বাংলাদেশি পণ্য দর্শন এবং বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ গ্রহণ করেন। বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি, গ্রামীণ বাংলার বৈশাখী আবহে স্টলসহ দূতাবাস প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে এক টুকরো বাংলাদেশ।
পাশাপাশি গ্রিক ভাষায় অনূদিত বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র ও বঙ্গবন্ধুর মহতী জীবন ও কর্মের উপর রচিত বিভিন্ন গ্রন্থের প্রদর্শনীর জন্য মেলায় দূতাবাস স্টল স্থাপন করা হয়।
রাষ্ট্রদূত তাঁর স্বাগত বক্তব্যে দূতাবাসের আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণ উৎসবে যোগ দেয়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সারা বিশ্বে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।
তিনি সম্প্রতি গ্রিক সরকারের সাথে স্বাক্ষরিত সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তির আওতায় সংস্কৃতির মেলবন্ধনের মাধ্যমে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো নিবিড় করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দূতাবাস আয়োজিত এই বর্ষবরণ উৎসব গ্রিস প্রবাসীদের মধ্যে বিপুল আনন্দ-উদ্দীপনার সঞ্চার করে এবং প্রবাসে এরকম সার্বজনীন বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতির বন্ধন আরো দৃঢ় করবে বলে অংশগ্রহণকারীরা মত প্রকাশ করেন।