রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ইস্পাত কঠিন ঐক্য দরকার: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৭:৪৫ অপরাহ্ণ আপডেট: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৭:৪৫ অপরাহ্ণ
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ইস্পাত কঠিন ঐক্য দরকার: মির্জা ফখরুল

সময়ের সংলাপ ডেস্ক:

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশে আজকের এই সংকট একা বিএনপির নয়, এই সংকট সমগ্র জাতির। এই সংকট শুধু একজন ব্যক্তিরও নয়। আজকে পুরো জাতির অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ যত দিন থাকবে এই জাতির অস্তিত্ব আরও বিপন্ন হবে, আরও বিপন্ন হবে, আরও বিপন্ন হবে। এর থেকে মুক্তি পেতে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জনগণ ও সকল রাজনৈতিক শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্য প্রয়োজন।’

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রতিষ্ঠাতা কাজী জাফর আহমদের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ২০১৫ সালের ২৭ আগস্ট কাজী জাফর আহমদ মারা যান।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ভয়াবহ এক দানব আমাদের ওপর বসে আছে। সেই দানবীয় শক্তি সমস্ত ​বিরোধী শক্তিগুলোকে ধবংস করে দিচ্ছে। সকলের যৌথ চেষ্টায় এবং সমস্ল মানুষের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মধ্য দিয়েই আমরা এদেরকে পরাজিত করতে সক্ষম হবো।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে কয়েকদিন আগেও আমি দেখা করেছি। তিনি একটা কথাই বলেছেন, কখনই সাহস হারাবেন না, কথনও হতাশ হবেন না। মনের মধ্যে জোর রাখবেন, মনোবল রাখবেন, বিজয় হবেই ইনশাল্লাহ। খালেদা জিয়া আমাদের সাথে আছেন, তিনি থাকবেন। তিনি মুক্ত হয়ে আবারও আমাদের নেতৃত্ব দেবেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের সাংবাদিকরা সেলফ সেন্সরশিপ করছেন। কারণ, যদি তাদের একটা শব্দ, একটা বাক্য যদি এদিক-ওদিক হয়, তাহলে তাদেরকে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে জেল। সরকার আসল ইস্যু থেকে মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে নিতে চায়। পত্র-পত্রিকাগুলোও ওই লাইনে চলে গেছে। যেটা ইস্যু না- কোথাকার কোন পরীমণি, ওমুক মণি-এসব নিয়ে তারা ঝাঁপিয়ে পড়ছে এবং ওটাকে বড় করে হেডলাইন করছে।’

তিনি বলেন, ‘চমৎকার! অন্তত একবার আমরা জানলাম যে, হাইকোর্ট নিম্ন আদালতকে এক্সপ্লানেশন কল করলো যে, তুমি রিমান্ডে নিয়েছো নিয়ম ব্যতিক্রম করে। কিন্তু যখন নিয়ম ব্যতিক্রম করে আমাদেরকে রিমান্ডে নেওয়া হয়, যখন রিমান্ডের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক নেতাদেরকে অত্যাচার করা হয় তখন সে সম্পর্কে গণমাধ্যম কথা বলে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি নেই বলে তারা এখন কবর নিয়ে কথা বলছে, জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কথা বলছে। তারা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাদের কিছু দেওয়ার নেই। সেজন্য এই সমস্ত ইস্যু নিয়ে আসছে।’

টিকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জ্যোতিষ বিদ্যা মন্ত্রী করা ভালো। কারণ সে প্রতিদিন বলছেন- এই টিকা আসছে ১০ লাখ, এই আসছে ৫ লাখ। জ্যোতিষীর মতো কত কথা বলছেন। প্রকৃতপক্ষে বাস্তবতাটা হচ্ছে- ৪ ভাগ মানুষকেও টিকা দেওয়া হয়নি।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমি বিএনপির কাছে আপিল করছি- তারা জাইমা রহমানকে (তারেক রহমানের মেয়ে) ঢাকায় আনুক। সেই হবে খালেদা জিয়ার প্রকৃত প্রতিভু। তিনি অফিস সেক্রেটারি হবেন, সাংগঠনিক সম্পাদক হবেন। চেয়ারম্যান হবেন না। তাহলে দেখবেন, জনগণ তাকে (জাইমা) নিয়ে হুড় হুড় করে পড়বে। এই সরকার পালাবার পথ পাবে না। প্রথম পালিয়ে যাবেন আমাদের প্রধান বিচারপতি। আমি আপনাদেরকে রাস্তায় দেখতে চাই। বিএনপিকে বলব, রাস্তায় নামেন। আমাদের যতই বয়স হোক আমি আপনাদের পেছনে থাকবো। এই দানবের হাত থেকে আমাদের মুক্তির প্রয়োজন। এই ভেজাল সরকারের পরিবর্তন চাই।’

জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব এএসএম শামীমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার সভাপতি খোন্দকার লুৎফর রহমান, জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সম্পর্কিত পোস্ট