শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদে প্রবাসীদের বাড়ি ফেরার পথে বাধা বাড়তি ‘টিকেট ভাড়া’

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৩ | ১২:৫৮ অপরাহ্ণ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৩ | ১২:৫৮ অপরাহ্ণ
ঈদে প্রবাসীদের বাড়ি ফেরার পথে বাধা বাড়তি ‘টিকেট ভাড়া’

ঈদ—একদিকে যেমন ধর্মীয় উৎসব অন্যদিকে আনন্দ ভাগাভাগির মোক্ষম সময়। আর এই সময়ে অন্য সবার মতো প্রবাসীদেরও ইচ্ছে থাকে নিজ পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করার। তবে টিকেটের বাড়তি দাম সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসীদের দেশে ফেরার পথে বড় বাধা হয়ে দাড়িয়েছে।

জানা গেছে, এবার সব এয়ারলাইনসেরই ওয়ানওয়ে টিকিটের দাম প্রায় ৭০ হাজার টাকার ওপরে। এমনই নৈরাজ্য চলছে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বাংলাদেশ যাত্রার বিমান টিকিট নিয়ে। অথচ এসব গন্তব্যে যারা যাচ্ছেন, তাদের প্রায় সবাই প্রবাসী শ্রমিক, দেশে আসা রেমিট্যান্সের সবচেয়ে বড় জোগানদাতা। উৎসব আয়োজন ঘিরে প্রবাসীদের আশা আকাঙ্ক্ষা থাকে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার।

কিন্তু আকাশ পথের উড়োজাহাজ প্রবাসীদের সেই আবেগ কি আর বুঝতে পারে! বিমান টিকিটের চড়া মূল্যে এমন আনন্দঘন সময় শুরু হওয়ার আগেই মলিন হয়ে পড়ে প্রবাসীদের চেহারা। এবারও ঈদুল আজহায় অনেকে দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও আকাশচুম্বী টিকিট মূল্যের কাছে হেরে গেছেন অনেক প্রবাসী।

দুবাই থেকে ঢাকা বা চট্টগ্রাম ওয়ানওয়ে বিমান টিকিট বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২৪শ ও ৩ হাজার দিরহামে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭০ হাজার টাকার ওপরে। কোনো কোনো ট্রাভেলস এজেন্সিতে ঈদের আগেই নেই বাংলাদেশ বিমানের কোনো টিকিট। তবে দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে ট্রাভেলস এজেন্সি বলছে, উৎসবের মৌসুমগুলোতে দাম এমন চড়াই থাকে।

স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্সিগুলোগুলো জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছ থেকে ২টি ঈদ এবং শীত মৌসুমকে ঘিরে তারা ব্যবসা করে থাকেন। কিন্তু এই সময়ে টিকিটের উচ্চ মূল্য থাকার প্রেক্ষিতে সাধারণ প্রবাসীদের প্রত্যাশা পূরণে তারা ব্যর্থ হন। তাছাড়া আগে ভাগে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে  টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ায় এই সময়ে ব্যবসায়িকভাবেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। টিকেটের মূল্য তিন থেকে চার হাজার দিরহামে বিক্রি হচ্ছে। কোন কোন সময় একটু কমলেও পুনরায় তা আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা বাংলাদেশী টাকায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার উপরে। 

বাংলাদেশ বিমান দুবাইয়ের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক সাকিয়া সুলতানা বলেন, এই সময় টিকিটের চাহিদা থাকে বেশি। ঈদের আগে আমিরাত থেকে বিজনেস ও ইকোনোমি ক্লাসের সব টিকিটই বুকিং হয়ে গেছে।

অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার ইচ্ছে থাকলেও হজের জন্য তা সম্ভব হয়নি।

এতে অনেক প্রবাসী দেশে ফেরার পরিকল্পনা বাতিল করছেন। কেউ কেউ বাতিল করেছেন ছুটির আবেদন। এমন অবস্থায় ঈদ বা উৎসব আয়োজনে বিমান টিকিটের মূল্য হ্রাস ও পর্যাপ্ত ফ্লাইট সুবিধা দেওয়ার দাবি করছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

এয়ারলাইন্স টিকেটের উচ্চ মূল্যের কারণে ঈদুল আজহায় এবার অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী দেশে যেতে পারছে না। ঈদের ছুটি পেয়ে অনেকে পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদ কাটানোর ইচ্ছা থাকলেও টিকেট কেনার সাধ্য না থাকায় সেই ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে না তাদের। 

সংযুক্ত আরব আমিরাতের কমিউনিটি নেতা শেখ ফরিদ আহমেদ বলেন, অন্যান্য সেক্টরের তুলনায় বাংলাদেশিদের টিকেটের মূল্য অনেক বেশি। প্রবাসীরা দেশে রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতি চাঙা রাখছে সরকারকে প্রবাসীদের কিছু সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

সরকারের প্রতি আহ্বান রেখে কমিউনিটি নেতা শেখ ফরিদ আহমেদ বলেন, সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান সরকার যাতে টিকেটের মূল্য সহনীয় পর্যয়ে রাখতে কাজ করে। এতে করে প্রবাসীদের জন্য দেশে ফেরা সহজ হবে।

ইফতেখার ইসলাম/ এসএস  

সম্পর্কিত পোস্ট