রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

আমাদের কেউ অপরাধ করলে তাকেও ছাড় দিচ্ছি না : কর্ণফুলীতে আইজিপি

প্রকাশ: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ৪:০১ অপরাহ্ণ আপডেট: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ৪:০১ অপরাহ্ণ
আমাদের কেউ অপরাধ করলে তাকেও ছাড় দিচ্ছি না : কর্ণফুলীতে আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, পুলিশ আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্ব নিয়ে মানুষের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে। এমনকি আমাদের কেউ অপরাধ করলে তাকেও ছাড় দিচ্ছি না। তবুও অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিএমপির কর্ণফুলী থানাধীন জুলধা ইউনিয়নের ডাঙ্গারচর নৌ-তদন্ত কেন্দ্র উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

আইজিপি আরও বলেন, নদীর নিরাপত্তার জন্য এই নৌ-তদন্ত কেন্দ্র ও নৌ-পুলিশ ফলপ্রসূভাবে কাজ করবে। চট্টগ্রাম একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এখানে বন্দর আছে।

সেজন্য বন্দর থানার পাশাপাশি বন্দর ডিভিশন আছে। শুধু বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে তা নয়, বন্দর এলাকার নিরাপত্তার জন্য সিএমপির সঙ্গে এই ইউনিটের (নৌ পুলিশ) সমন্বয় থাকা দরকার। আমি মনে করি, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবি কাজ করছে। বিজিবির সঙ্গে সমন্বয় করে পুলিশও কাজ করছে। আইনানুগভাবে বিজিবি আমাদের কাছে সব সহযোগীতা পাবে।

পুলিশ জানায়, পর্যায়ক্রমে কর্ণফুলীর রাঙাদিয়া, চাক্তাই ও গুপ্তখাল এলাকায় বন্দরের জায়গায় আরও তিনটি নৌ-তদন্ত কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

পুলিশ হেফাজতে এক ব্যক্তির মৃত্যু বিষয়ে আইজিপি বলেন, এমন ঘটনা সংঘটিত হলে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে মরদেহের সুরতহাল করা হয়ে থাকে। ডাক্তারের মতামত, পোস্টমর্টেম ও তদন্তের ভিত্তিতে যে তথ্য উঠে আসে সেটি নিয়ে সবসময় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। সামনেও এধরনের ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

শাহ আমানত সেতু থেকে বঙ্গোপসাগরের মোহনা পর্যন্ত বন্দর চ্যানেলের নিরাপত্তা জোরদার করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০০২ সালের দিকে নৌ-তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানালে ২০০২ সালে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে কর্ণফুলী নদীর দুই তীরে কর্ণফুলী উপজেলার ডাঙ্গারচর, রাঙাদিয়া, নগরীর চাক্তাই ও গুপ্তখাল এলাকায় চট্টগ্রাম বন্দরের জায়গায় দুটি করে চারটি নৌ তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়।

২০১৩ সালে নৌ-পুলিশ প্রতিষ্ঠার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য ডাঙ্গারচরে নদীর কাছে জায়গা বরাদ্দ দেয়। সেখানে দোতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু থেকে কর্ণফুলী নদীর মোহনা পর্যন্ত এলাকায় দস্যুতা, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে কাজ করবে সিএমপি। নৌ-তদন্ত কেন্দ্র তাদের আওতায় থাকা এলাকায় টহলসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

সিএমপি সূত্র জানায়, প্রতিটি কেন্দ্রে একজন উপ পরিদর্শকের (এসআই) নেতৃ ত্বে ৩৮ জন করে মোট চারটি তদন্ত কেন্দ্রে ১৫২ জনের জনবল কাঠামো সৃষ্টি করা হয় ২০০৪ সালে। এরপর তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম স্থিমিত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নৌ-পুলিশ। নগরীর সদরঘাটে নৌ থানার কার্যক্রম শুরু হয়।

দীর্ঘদিনের স্থবিরতার পর বছর চারেক আগে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে নৌ-তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের অগ্রগতি জানতে আবার ফাইল নাড়াচাড়া শুরু হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য ডাঙ্গারচরে নদীর কাছে জায়গা বরাদ্দ করে।

বিধি অনুযায়ী নৌ-পুলিশ নদীতে এবং তীরের ৫০ মিটার এলাকায় কাজ করে থাকে। আওতাধীন এলাকায় যে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কাজের ক্ষেত্রে নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়।

নৌ-পুলিশ মামলাগুলোর তদন্ত করে। তবে আমাদের পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় অনেক সময় অন্যান্য সংস্থার সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে হয়। একই বাহিনীর অধীন হওয়ায় থানা এবং নৌ-পুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করবে।

এ সময় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা ও অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) এএসএম মাহাতাব উদ্দিন, বন্দর ডিসি শাকিলা শারমিন, নৌ-পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সুপার (এসপি) আ ফ ম নিজাম উদ্দিন, কর্ণফুলী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইউএনও) পিযুষ কুমার চৌধুরী, ওসি জহির হোসেন, এসি আরিফ হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আমির আহম্মদসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত পোস্ট