শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘বাবা-মাকে প্রশিক্ষণ দিয়েই অটিজম ঠেকানো সম্ভব’

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১:৩৪ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১:৩৪ পূর্বাহ্ণ
‘বাবা-মাকে প্রশিক্ষণ দিয়েই অটিজম ঠেকানো সম্ভব’

শিশুদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে সে বিষয়ে বাবা-মাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে অটিজম কমিয়ে আনা সম্ভব বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে সেই গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে বলা হয়, যোগাযোগ স্থাপনে শিশুর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক চেষ্টাগুলো কীভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে সে বিষয়ে একটি ভিডিওতে পরামর্শের মাধ্যমেই দুই-তৃতীয়াংশ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

৯ থেকে ১৪ বছরের ৮৯টি শিশুর ওপর চার বছর ধরে এ পরীক্ষা চালানো হয়। এদের মধ্যে অর্ধেক শিশুর বাবা-মা পাঁচ মাস ধরে ভিডিওতে পরামর্শ পেয়েছেন। বাকি অর্ধেক শিশুর ক্ষেত্রে প্রচলিত সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ফলাফলে দেখা গেছে, ভিডিওর মাধ্যমে অভিভাবকদের দেওয়া সাধারণ পরামর্শের মাধ্যমেই প্রথম গ্রুপের দুই-তৃতীয়াংশ শিশুকে অটিজম থেকে রক্ষা করা গেছে।

ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার এবং ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা এ গবেষণায় তিন বছরের শিশুদের অটিজম শনাক্ত হওয়ার হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৬ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। ভিডিওতে বাবা-মার সঙ্গে অটিজমের ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের যোগাযোগ স্থাপনের কিছু ঘটনা ধারণ করা হয়। বাবা-মা যাতে সে অনুযায়ী সাড়া দিতে পারেন সে জন্য পরবর্তী সময় এক জন থেরাপিস্ট বাচ্চাটি কীভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে তা বুঝিয়ে দেন। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ এড়িয়ে চলার চেয়ে বরং যোগাযোগ স্থাপনের প্রবণতাই বেশি। তবে তারা সেটা এমনভাবে করে যা বাবা-মায়ের পক্ষে বুঝে ওঠা মুশকিল হয়। যেমন কোনো শিশু হয়তো কারো দিকে না তাকিয়েই তা মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করতে পারে। অভিভাবকরা তা বুঝতে ব্যর্থ হলে শিশুদের মস্তিষ্কের উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সে কারণে তার সামাজিক যোগাযোগ স্থাপনে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতাও তৈরি হতে পারে।

ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটির শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জনাথন গ্রিন বলেন, ‘অটিজম এমন একটি অবস্থা, যেটা শিশুর জন্মলগ্ন থেকেই থাকে বলে আমরা জানি, আসলে তা শুরু হয় জন্মের আগে থেকেই।’

তিনি বলেন, ‘প্রথম কয়েক বছর আপনি হয়তো অটিজমের সমস্যা পুরো মাত্রায় দেখতে পাবেন না, কিন্তু আপনি নানা লক্ষণ দেখতে পাবেন এবং তিন বছরের মাথায় অটিজম ধরা পড়ে।’ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, ‘শিশুর প্রাথমিক যত্ন যিনি নিচ্ছেন, তিনি কীভাবে শিশুটির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তা শিশুর মস্তিষ্ক এবং সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।’

সম্পর্কিত পোস্ট