শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এক মণ ধানেও মিলছে না শ্রমিক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২২ | ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ১৫ মে ২০২২ | ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ
এক মণ ধানেও মিলছে না শ্রমিক

চলন বিলজুড়ে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার উৎসব। ফলনও হয়েছে ভালো। তবে মনে হাসি নেই কৃষকদের মুখে। কয়েক দফা ঝড় আর বৃষ্টিতে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেইসঙ্গে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এক মণ ধানের দামেও একজন শ্রমিক মিলছে না।

সরেজমিনে নাটোরের সিংড়া উপজেলার চকসিংড়া, শোলাকুড়া, বালুয়া-বাসুয়া, শেরকোল, নিংগইন, রাখালগাছা, তাজপুর, নওগাঁ, চৌগ্রাম, জামতলী, সাঁতপুকুরিয়া এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সিংড়ায় বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬ হাজার ৩০০ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে লক্ষ্যমাত্রা। এ পর্যন্ত ৯০ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে।

জানা গেছে, এ বছর বোরো ধানের আবাদ ভালো হলেও কয়েক দফা ঝড় আর বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি হয়েছে। টানা বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেতে পানি জমে ধান তলিয়ে গেছে। এছাড়া ধান কাটতে শ্রমিক প্রতি গুনতে হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকা। আর বাজারে ধানের দাম ৭০০-৮০০ টাকা মণ। ফলে এক মণ ধানের বিনিময়ে শ্রমিক পাচ্ছেন না কৃষকরা।

কতুয়াবাড়ি এলাকার কৃষক সাজু আহমেদ বলেন, হাজার টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আবাদে খরচ অনেক বেশি, সে তুলনায় ফলন কম। এ বছর অনেক লোকসান হবে।

চকসিংড়া মহল্লার কৃষক আব্দুস সোবহান জানান, ধান কাটার পর বৃষ্টির কারণে শ্রমিকরা চলে গেছে। ধান বহন করার জন্য ৫ দিন শ্রমিক খোঁজার পরে বেশি মজুরিতে পেয়েছি। তবে বৃষ্টিতে ভিজে ধানের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে।

সুকাশ ইউনিয়নের বনকুড়ইল গ্রামের মাওলানা নাজমুল হক বলেন, ধান কাটার কাজের জন্য অনেক খুঁজে ১১০০ টাকা দিনে শ্রমিক পেয়েছি। ধান আবাদে এ বছর খরচ অনেক বেশি হয়েছে।

কৃষকরা জানান, বোরো ধান যখন ফুলে বের হয়েছে, তখনই কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ নুয়ে মাটিতে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চাষিদের খরচের টাকাও উঠবে না। তাছাড়া শ্রমিক সঙ্কটের কারণে ধান কাটা যাচ্ছে না। জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় শ্রমিকরা ধান কাটতে চাচ্ছে না। ফলে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা।

এক কৃষক বলেন, ‘বাজারে ধানের দাম ভালো। তবে সময়মতো মাঠ থেকে ধান গরে তুলতে পারব কি না, তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছি।’

শ্রমিক সংকটের কথা উল্লেখ করে কৃষকরা বলেন, মাঠের অধিকাংশ ধান পেকে যাওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এ এলাকায় ১১০০ টাকা মণ ধান। শ্রমিকের মজুরি বাবদ অনেক বেশি খরচ পড়ছে। ১১০০ টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
মজুরি বেশি নেওয়ার বিষয়ে শ্রমিকরা বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মজুরি বেশি নিতে হচ্ছে। যে টাকা পায় তা দিয়ে চাল-ডাল-তেল কিনতেই শেষ হয়ে যায়। ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা বলেন, এ বছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৯০ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে শ্রমিক সংকট রয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট