শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রবাসে ঈদ, প্রবাসীর ঈদ : দ্বিতীয় পর্ব

সাক্ষাৎকার : শেফালী আকতার আঁখি

ঈদের আনন্দ প্রতিটি প্রাণে দোলা দেয়

ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ! মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মানুষের প্রত্যাশা আর প্রস্তুতির কমতি থাকে না। তবে প্রবাসীদের জীবনে এর বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এর উপর করোনার কারণে গেল দুই বছর দেশে ও প্রবাসে অনেকটাই নিরানন্দ ঈদ কেটেছিল। করোনা মোকাবিলা করে নব উদ্যমে আনন্দ উল্লাস আর ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে এবার। সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী বাংলাদেশিরা কে কীভাবে ঈদ উদযাপন করবেন তা নিয়ে সময়ের সংলাপ-এ থাকছে ধারাবাহিক আয়োজন ‘প্রবাসে ঈদ, প্রবাসীর ঈদ’। দ্বিতীয় পর্বে কথা বলেছেন সফল নারী উদ্যোক্তা, স্বনামধন্য পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আল বোরাখ গার্মেন্টসের ডাইরেক্টর ও শারজাহ বাংলাদেশ সমিতির মহিলা সম্পাদিকা শেফালী আকতার আঁখি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক এস এম শাফায়েত

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২২ | ৫:৫৭ অপরাহ্ণ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২২ | ৯:১১ অপরাহ্ণ
ঈদের আনন্দ প্রতিটি প্রাণে দোলা দেয়

সময়ের সংলাপঃ আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন?
আঁখিঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম। রমাদান মোবারক। আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।

সময়ের সংলাপঃ ঈদ নিয়ে আপনার তথা প্রবাসীদের অনুভূতির কথা জানতে চাই-
আঁখিঃ পুরো একমাস সংযমী থেকে পরিশুদ্ধ হৃদয়ে কলুষমুক্ত জীবন, পরিবার ও সমাজ গঠনের অঙ্গীকারে একে অপরকে পরম আবেগে বুকে জড়িয়ে ধরার নামই ঈদ। হোক দেশ কিংবা পরবাস। ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। শাব্দিক অর্থে বার বার ফিরে আসা। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় খুশির দিন। কবি নজরুলের ভাষায় ঈদের আনন্দ আজ সকলের মাঝে পড়ুক ছড়িয়ে। হিংসা-বিদ্বেষ, ধনী-গরীব ভেদাভেদ ভুলে জাত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মিলিত হই ঈদের এই সীমাহীন আনন্দ-উৎসবে। ঈদের আনন্দ সর্বজনীন আর তাই এই আনন্দ প্রাপ্তির আনন্দ। এই আনন্দ আল্লাহর তাকওয়া অর্জনের সাফল্যের আনন্দ। আর এই আনন্দ রূপ নেয় সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উৎসবে। ঈদুল ফিতর পরিণত হয়েছে সার্বজনীন উৎসবে। এই আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে ধনী-গরিব, ছোট-বড় সবার মধ্যে। প্রতিটি প্রাণে দোলা দেয় ঈদের আনন্দ।

সময়ের সংলাপঃ এ বছর ঈদ নিয়ে আপনার ভাবনা কী?
আঁখিঃ মহামারির কারণে গেল দুটি বছর শুধু আরব আমিরাত বা বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্ব থমকে ছিল। দৈনন্দিন জীবন যাপনে নেমে এসেছিল ঘোর অমানিশা। এ বছর সেই পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। আর কিছু দিন গেলে আমরা পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবো। কারণ এখন মাস্ক পরে চলাফেরা করাসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। সবমিলিয়ে আমাদের কাজকর্ম, ব্যবসা বাণিজ্যেও উন্নতি হয়েছে। আমরা আগের চেয়ে অনেক ভালো আছি। আশাকরি এই বছর ঈদুল ফিতর অনেক ভালো কাটাবো। কারণ বিগত বছরে আমাদের আত্মীয় স্বজন, পরিচিতজন থেকে শুরু করে এত মানুষ মারা গেছে যে আমরা শোক কাটিয়ে আনন্দ করার কোন সুযোগ পায়নি। ঈদ কী ছিল আমরা অনুভব করতে পারিনি। এবছর আমরা মিলেমিশে ভালোভাবে ঈদ কাটাতে পারবো। সবার মনের মধ্যে এমনি উৎসাহ উদ্দীপনা কাজ করছে।

সময়ের সংলাপঃ প্রবাসীদের ঈদের কেনাকাটা নিয়ে কিছু বলুন-
আঁখিঃ ঈদের আনন্দটা যে কী পরিমাণ তা বলে বোঝানো যাবে না। ঈদ এলেই সবচেয়ে বেশি যে আনন্দটা হয় সেটা হলো নতুন জামাকাপড় কেনা। প্রসাধনী থেকে শুরু করে নিত্যনতুন জিনিসপত্র কেনা। এটা ছোট বড়, নারী পুরুষ সবার মধ্যে বিরাজমান। আর আমরা যারা আরব আমিরাত বা দুবাইতে আছি সবাই ইতিমধ্যে মার্কেটে বের হয়েছে। সবাই সবার সাধ ও সাধ্যমতো কেনাকাটা করছে। একেক জনের চাহিদা একেক রকম। কেউ কিনবে শাড়ি, চুড়ি, জামা-কাপড়, কেউ আবার গোল্ড-ডায়মন্ডের গহনা। যার যার চাহিদা মতো, যার যা প্রয়োজন তাই কিনবে।

সময়ের সংলাপঃ কমিউনিটি ভিত্তিক ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি কেমন?
আঁখিঃ ঈদ উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশ কমিউনিটিতে অনেক জমকালো আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী, আনন্দ উৎসব হয়ে থাকে। তখন মনে হয় যেন আমরা বাংলাদেশেই আছি অথবা এক টুকরো বাংলাদেশ পেয়েছি প্রবাসের মাটিতে কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এই দুই তিন বছরে তা আমরা ভুলতে বসেছিলাম। এবছর সেই সংকট কিছুটা দূর হয়েছে। প্রকাশ না পেলেও সবার মধ্যে ঈদের আনন্দ বিরাজ করছে, সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে। আশায় আছি আবারও এক জমকালো আয়োজনের মধ্যদিয়ে আনন্দ উৎসবে মিলিত হতে পারবো আমরা সবাই।

সম্পর্কিত পোস্ট