
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিটি শব্দই ছিল তার হৃদয়ের গভীর থেকে উৎসরিত। তিনি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলেও পরোক্ষভাবে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলেন। গতকাল সোমবার রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, জাতির পিতা ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের পূর্বে অনেকেই তাকে অনেক রকম পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেদিন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন “তুমি মন থেকে যা বিশ্বাস করো, সেই বিশ্বাস থেকেই আগামীকাল বক্তৃতা করবে। ’ বঙ্গবন্ধু সেভাবেই তার বিশ্বাস ও হৃদয়ের গভীর থেকে সেদিন ভাষণ দিয়েছিলেন। আমাদের জাতীয় জীবনে মার্চ মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস।
এ মাসের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৭ তারিখ জাতির পিতার জন্মদিন ও এছাড়া ২৬ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস, তাই এ মাস আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের মাস। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ছিল অত্যন্ত কূটনৈতিক ও কৌশলী ভাষণ।
তিনি বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে তিনি সকল খাতের উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই বিশ্বের কাছে উদাহরণ হয়ে উঠতো।
জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে ও ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সবার অবস্থান থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের “সোনার বাংলা” গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার জন্য প্রবাসীদের আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী তার বক্তব্যে বলেন, বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম ভাষণগুলোর মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ অন্যতম। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি ছিল প্রাজ্ঞ ও কৌশলী ভাষণ। তাই পৃথিবীর অনেক রাষ্টবিজ্ঞানী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও গবেষক ৭ মার্চের ভাষণকে নিয়ে করেছেন বহুমাত্রিক আলোচনা।
এ ভাষণ নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে এবং ভবিষ্যতে এ ঐতিহাসিক ভাষণ নিয়ে আরো ব্যাপক গবেষণা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে নিউজউইক বঙ্গবন্ধুকে “পোয়েট অব পলিটিক্স” বা ‘রাজনীতির কবি’ উপাধি যথার্থ হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে সৌদি আরব সফররত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে রিয়াদ প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন, ব্যবসায়ী এম এ জলিল, এম আর মাহবুব ও আব্দুস সালাম বক্তব্য প্রদান করেন। এ সময় ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রদর্শন করা হয়। দূতাবাসের কাউন্সেলর মো. বেলাল হোসেন অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এছাড়া দূতাবাসে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রদূত। এ সময় দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষে দূতাবাসের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত “ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ,২০২২” উদযাপন অনুষ্ঠানটির সরাসরি সম্প্রচার প্রদর্শন করা হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ও সৌদি আরব প্রবাসীরা অনুষ্ঠানটি সরাসরি উপভোগ করেন।
সংলাপ/০৩/০৮/০১৬ আজিজ