সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে নানাধরনের সন্দেহ তৈরি হয়েছে। কোনো ধরনের প্রচার প্রচারণা ছাড়াই আমিরাতের মাটিতে এই আয়োজন কী অর্থে করা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন ও বিতর্ক দেখা দিয়েছে। আগামী ৩ ডিসেম্বর এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দেয়া হলেও শারজা বা আমিরাতের দর্শকদের কাছে এ পর্যন্ত কোনো বার্তায় পৌঁছানো হয়নি। এটি ব্যবসায়িক আয়োজন নাকি বিনামূল্যে প্রবেশাধিকারের আয়োজন সে বিষয়েও কোনো ধারণা নেই প্রবাসীদের।
খবর নিয়ে জানা গেছে, মিরর মিডিয়া নামে একটি ইভেন্ট কোম্পানি বাংলাদেশ ইউএই ফ্রেন্ডশিপ ফেস্টিভাল নাম দিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেল এই অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে। এতে পারফর্ম করার জন্য ঢাকা থেকে নায়ক ফেরদৌস, পূর্ণিমা, নুসরাত ফারিয়া সহ ৪০ জনের একটি দল দুবাই আসবেন ১ ডিসেম্বর।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকার কথা রয়েছে। গত দুই মাসে মন্ত্রীর এই নিয়ে তিনবার সফর হচ্ছে দুবাইতে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সাথে যোগাযোগ করা হলে কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন বলেন, ‘অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দূতাবাস বা বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এই অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে আগেভাগে বাংলাদেশ মিশনগুলোকে জানানো হয়নি। তবে মন্ত্রী মহোদয় আসবেন বলে আমরা চিঠি পেয়েছি। মন্ত্রী মহোদয়ের প্রটোকলের জন্য আমাদের যা ব্যবস্থা করা প্রয়োজন আমরা তাই করব।’
একঝাঁক তারকা শিল্পীর অংশগ্রহণের অনুষ্ঠানটি ব্যবসায়িক বলে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের অপর এক কর্মকর্তা জানালেও এখনো এই বিষয়ে দুবাই বা শারজাতে কোনো প্রচার করেনি আয়োজকরা। এই আয়োজন ব্যক্তিগত কি-না তাও স্পষ্ট নয় এখনও। অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে ২/১ জনের ফেসবুক পেইজে পোস্ট দেওয়া হলেও আমিরাতের কোথাও পোস্টার-লিফলেট অথবা টিকিটের কোন হদিস পাননি প্রবাসীরা। তবে কেন এতবড় আয়োজনটি করা হচ্ছে বা কাদের উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে তা নিয়েও প্রবাসীদের মাঝে সন্দেহ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
আবুল কালাম নামে এক প্রবাসী জানান, বাংলাদেশের কালো টাকা সাদা করার জন্য একটি বিশেষ চক্র দুবাইতে সক্রিয় রয়েছে। হয়ত এই অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে এই ধরনের একটি বিশাল কালো টাকার বাণিজ্য হবে বলে সবাই ধারণা করছে। কেউ কেউ আবার এই দর্শক বিহীন অনুষ্ঠান বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে দারুণভাবে ক্ষুণ্ণ করবে বলেও অভিমত দিয়েছেন।
এদিকে আগামী ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ মিশনের উদ্যোগে একই ভেন্যুতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। এতে সম্মানিত করা হবে দুবাই ও শারজার রাজপরিবারের ২ জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে। ফলে এ অনুষ্ঠানের পূর্বে কাছাকাছি সময়ে একই ভেন্যুতে আরেকটি অনুষ্ঠান মূল অনুষ্ঠানের গুরুত্বকে খাটো করবে বলে অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ কমিউনিটি।
এই আয়োজনের অপারেশনের দায়িত্বে থাকা অনি নামে একব্যাক্তির সাথে ফোনে আলাপ হলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে আমরা মিরর মিডিয়ার উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানটি করতে যাচ্ছি। তবে মাঠ বরাদ্দ পাইনি বলে আমাদের প্রচারণা চালানো সম্ভব হয়নি। রবিবার দুপুরে বাংলাদেশ কনস্যুলেটকে আমন্ত্রণ করেছি। আজ সোমবার আজমানে সাংবাদিকদের ডেকে আয়োজন সম্পর্কে জানানো হবে।