চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আলোচিত ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২০ বছর ধরে পলাতক আসামি সৈয়দ আহম্মেদকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এই ২০ বছরে তিনি কখনো উদ্বাস্তু, কখনো বাবুর্চি ও কখনো নিরাপত্তাকর্মীর ছদ্মবেশে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার।
তিনি বলেন, ২০০২ সালের ৩০ মার্চ পূর্ব শত্রুতার জের ধরে জানে আলমকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে মো. তজবিরুল আলম বাদী হয়ে লোহাগাড়া থানায় ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মধ্যে সৈয়দ আহম্মেদ ২নং ও অন্যতম প্রধান আসামি। ২০০৭ সালের ২৪ জুলাই এ মামলায় আদালত ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। পরে আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিলে সৈয়দ আহম্মেদসহ মোট ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২ জনকে যাবজ্জীবন এবং বাকীদের খালাস দেন।
র্যাব কর্মকর্তা মো. নুরুল আবছার বলেন, জানে আলমকে হত্যার পরপরই সৈয়দ আহম্মেদ প্রথম ৪ থেকে ৫ বছর তার পরিবার এবং আত্মীয়স্বজন ছেড়ে বাঁশখালী, আনোয়ারা, কতুবদিয়া ও পেকুয়ার সাগর উপকূলবর্তী এলাকায় থাকতে শুরু করে। পরবর্তীতে সে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকায় উদ্বাস্তু হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় ভুয়া ঠিকানা দিয়ে অবস্থান করে। এছাড়াও সে জঙ্গল ছলিমপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস করেছে কিছুদিন। কিন্তু পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে সেখানে সে নিরাপদ মনে না করে পুনরায় চট্টগ্রামে বিভিন্ন মাজার এলাকায় বাবুর্চির কাজ করে। এরপর চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবরশাহ থানায় একটি বাড়ীতে দারোয়ানের ছদ্মবেশে কাজ নেয় এবং সেখানে সে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে।
তিনি বলেন, পলাতক থাকাকালীন সময় আসামি সৈয়দ আহম্মেদ ভুয়া ঠিকানায় দুটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। এসময় সৈয়দ আহম্মেদ তার পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখে। যার কারণে তাকে কোনভাবেই ব্যবসায়ী জানে আলমের হত্যা মামলার আসামি বলে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না।
ওই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৈয়দ আহম্মেদ চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সাজাপ্রাপ্ত আসামি বলে স্বীকার করেছেন।