ভারতের ওড়িশা রাজ্যে অসুস্থ হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭০ বছরের বেশি এক বৃদ্ধা। ওই বৃদ্ধা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গেলে এক সমাজকর্মী তাকে নাচতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই এবং সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধার নাম কমলা পূজারি। সম্প্রতি কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য ওড়িশার কটকের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ৭১ বছর বয়সী কমলা পূজারি একজন পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
এদিকে পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত কমলার নাচের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যদিও বার্তাসংস্থা পিটিআই ওই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি। তবে ভিডিওতে অভিযুক্ত সমাজকর্মী মমতা বেহরাকেও কমলার সঙ্গে নাচ করতে দেখা গেছে। এরপরই ওড়িশার পারাজা আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্যরা ওই সমাজকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী কমলা পূজারি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি কখনোই নাচ করতে চাইনি, কিন্তু আমাকে নাচ করতে বাধ্য করা হয়েছে। আমি অসুস্থ ছিলাম, নাচ করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের সংগঠন ‘পারাজা সমাজ’-এর সভাপতি হরিশ মুদুলি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার যদি ওই সমাজকর্মীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা না নেয় তবে তারা রাস্তায় নামবেন।
২০১৯ সালে জৈব চাষ ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ১০০টিরও বেশি জাতের দেশী বীজ সংরক্ষণের জন্য পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছিলেন কমলা পূজারি। কিডনির সমস্যার জন্য সম্প্রতি তাকে কটকের এসসিবি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, গত সোমবার কমলাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার সময় তাকে নাচ করতে বাধ্য করার এই ঘটনাটি ঘটেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাকে বিশেষ কেবিনে রাখা হয়েছিল। হাসপাতালের রেজিস্ট্রার অবিনাশ রাউত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কমলাকে দেখতে এসে ওই সমাজকর্মী তাকে জোর করে নাচতে বাধ্য করেন।
পূজারির অ্যাটেনড্যান্ট রাজীব হিয়াল জানিয়েছেন, তিনি ওই সমাজকর্মীকে চেনেন না। কিন্তু ওই সমাজকর্মী কেবিনে ঢুকে পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত কমলার সঙ্গে একের পর এক সেলফি তুলতে থাকেন।
তবে অভিযুক্ত মমতা দাবি করেছেন, তার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না।