সাভারে করোনার টিকা প্রদানের জন্য কেন্দ্র বাড়ানো হলেও আগের কেন্দ্রে জনস্রোতে পরিণত হয়েছে। পুলিশ কিংবা স্বেচ্ছাসেবকরা পরিস্থিতি রক্ষা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে লাঠিপেটা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় অন্তত ১৪ জন টিকা-প্রত্যাশী আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী নবনির্মিতি ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যানেজমেন্ট’ (বিআইএইচএম) টিকা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্বাস্থ্যকর্মী ও আনসার সদস্যরা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
টিকা-প্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ প্রদান বন্ধ করা হবে বলে জানতে পারেন তারা। এ জন্য দুই ঘণ্টার ছুটি নিয়ে কারখানা থেকে বের হয়ে এসেছেন। কিন্তু ২৬ তারিখের পরও টিকা কার্যক্রম চলমান থাকবে, এমনটা জানলে আজ আসতেন তারা।
কয়েকজন বলেন, আমাদের আগেই জানানো প্রয়োজন ছিল। মাইকিং অথবা প্রতিটি পোশাক কারখানায় বলে দেওয়া উচিত ছিল যে ২৬ তারিখের পরেও টিকা নেওয়ার সুযোগ আছে। তাহলে এত লোকের ভিড় আর ভোগান্তি হতো না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৬ ফেব্রুয়ারির পর করোনার টিকার প্রথম ডোজ বন্ধের ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলমের ঘোষণার পর থেকে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে বলে দাবি অনেকের। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারির পর টিকা প্রদান বন্ধ ভেবে এলাকাবাসীসহ পোশাকশ্রমিকরা হুমড়ি খেয়ে বসেছেন টিকা নিতে। ফলে এমন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে।
টিকা-প্রত্যাশী মনির হোসেন জানান, সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিতে সাভারের ‘বিআইএইচএম’ টিকা কেন্দ্রে আসে। এ সময় টিকা-প্রত্যাশীদের চাপাচাপি এবং কে কার আগে টিকা নেবে, এমন প্রতিযোগিতায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন টিকা নিতে আসা অনেকেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে লাঠির বাড়ি দেয় পুলিশ। আজ তৃতীয় দিনের মতো একই পরিস্থিতি চোখে পড়েছে। আজকের পর আসব না।
পোশাকশ্রমিক মোতালেব বলেন, প্রতিদিনই একই অবস্থা। আজ আরও বেশি লোকজন টিকা নিতে এসেছেন। দিন দিন ভিড় যেন বাড়ছেই। সকাল থেকেই এমন ভিড়। টিকা প্রদানের সিস্টেম ভালো লাগেনি। আরও উন্নত প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থাপনায় গণটিকা প্রদান করা দরকার বলে আমি মনে করি। তা ছাড়া টিকা-প্রত্যাশীদের টিকার বদলে পুলিশের লাঠির বাড়ি সহ্য করে যেতে হবে।
কেন এমন অবস্থা, জানতে চাইলে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, হাজার হাজার টিকা-প্রত্যাশীর উপচে পড়া ভিড়। সাভারে আরও টিকা কেন্দ্র রয়েছে। জনস্রোতের কথা বিবেচনা করে বাড়ানো হয়েছে টিকা কেন্দ্র। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারির পরও আমাদের এখানে টিকা নেওয়া যাবে। হতাশ হওয়ার কিছু নাই। সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে টিকা নেওয়ার অনুরোধ করছি। সবার কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম বলেন, টিকা কেন্দ্রে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে পুলিশ। যাতে সুষ্ঠুভাবে সবাই প্রদান করতে পারেন।