মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সংঘর্ষের ঘটনায় আবারো প্রমাণিত দেশে কোনো সরকার নেই : মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২২ | ২:৫২ অপরাহ্ণ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২২ | ২:৫২ অপরাহ্ণ
সংঘর্ষের ঘটনায় আবারো প্রমাণিত দেশে কোনো সরকার নেই : মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আবারো প্রমাণিত হয়েছে, দেশে আসলে কোনো সরকার নেই। এ সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ সরকার। তারা রাষ্ট্রকেও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’

বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটি গঠন উপলক্ষে মাজারে শ্রদ্ধা জানানো হয়।  

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তাদের চোখের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়েছে, সেটা বন্ধের জন্য তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উপরন্তু তাদের কর্মকর্তারা বিভিন্নভাবে বক্তব্য দিচ্ছেন, তারা কোনো পক্ষেই ছিলেন না, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে। নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তারা সংঘর্ষকে আরো ভয়াবহ হতে ভূমিকা পালন করেছে। এ মৃত্যুর জন্য, হত্যার জন্য তারাই দায়ী।’

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূতকে মিসকোড করে বিএনপি বক্তব্য দিয়েছে- রাষ্ট্রদূতের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ কথাগুলো তিনি সঠিক বলেননি। কারণ আমাদের তিনি (আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী) কখনো জার্মান রাষ্ট্রদূতকে কোড করে এ কথাগুলো বলেননি। জার্মান রাষ্ট্রদূত ভুল উদ্ধৃতি দিয়েছেন।’

ছাত্রদলের নতুন কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন কমিটি মাজারে ফুল দিয়ে শপথ নিয়েছে, তারা সংগঠনকে অত্যন্ত সুসংগঠিত ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ছাত্রদলকে উপযোগী করে তুলবে। অল্প সময়ের মধ্যে তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে সারাদেশে অতীত ঐতিহ্য অনুযায়ী ছাত্রদলকে একটি শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করবে। আজকে দেশে যে সংকট, গণতন্ত্রহীনতা, জনগণের ভোটাধিকার হরণ ও ছাত্রদের যে ন্যূনতম দাবি, সেইগুলো পূরণ না করা, শিক্ষা ব্যয় কমানো, শিক্ষা শেষে যেন কর্মসংস্থান পায় সেই আন্দোলনগুলো অবশ্যই ছাত্রদল করবে।’   

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে থেকে প্রমাণিত হয়, তারা যে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী, অবৈধ সরকার আছে তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে দেশকে পরিচালনা করতে। দেশকে সুষ্ঠু জায়গায় নিয়ে আসতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে, আওয়ামী লীগ যে আজকে জোর করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশ থেকে গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। ছাত্রদের তাদের ন্যূনতম ব্যয়ে শিক্ষা লাভের যে অধিকার রয়েছে, তা থেকে বঞ্চিত করেছে। একইসঙ্গে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম দুর্যোগের দিকে গেছে। ভয়াবহ দুর্নীতির করালগ্রাসে দেশকে নিমজ্জিত করেছে। সেজন্য দেশের সব মানুষ দাবি তুলেছে, অবিলম্বে এ সরকারের পদত্যাগ করা উচিত। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ সরকারের পরিচালনায় জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠাতা করাই আজকে সবচেয়ে বড় দাবি এবং আন্দোলন।’

আওয়ামী লীগের অপরাধটা কী— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘উনাদের সবচেয়ে ভয়ংকর অপরাধ, এই দেশে তারা গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। দেশকে তারা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যে লক্ষ্যগুলো ছিল, সেসব লক্ষ্যকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’  

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ। 

সম্পর্কিত পোস্ট