মদ, জুয়া, অপহরণসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে লেবাননের প্রবাসী বাংলাদেশিরা। কয়েক বছর ধরে লেবাননের চলমান অর্থনৈতিক মন্দায় আইন-কানুন অনেকটা শিথিল থাকায় প্রবাসীদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এমতাবস্থায় হাতেগোনা কয়েকজনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে দেশটিতে হুমকির মুখে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি।
লেবাননে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সোমবার রাতে বাংলাদেশিদের সতর্ক ফেসবুকে একটি নোটিশ পোস্ট করেছেন। এতে বলা হয়েছে, কতিপয় বাংলাদেশির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকাসহ গণ উপদ্রব সৃষ্টি, হাইছিলুম, আশরাফিয়ে, মুকাল্লেস, মনসুরিয়ে, নাভাসহ বিভিন্ন এলাকায় অবাধে জুয়ার আসর, নাইট ক্লাবে গিয়ে অসামাজিক কর্মকাণ্ড ও অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িতদের সতর্ক করে বলেন, ভবিষ্যতে যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ দূতাবাস লেবানন।
দেশটিতে বেশ কয়েক বছর ধরে স্থানীয় নাইট ক্লাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকের নামে কিছু বাংলাদেশির উশৃঙ্খলা চরমে পৌঁছেছে। যেখানে-সেখানে টিকটকের নামে অশ্লীলতা, বিভিন্ন এলাকায় অবাধে জুয়া আসরের নামে বাংলাদেশিদের নিঃস্ব, নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন, আধিপত্য বিস্তার, হত্যা, অপহরণ করে অর্থ আদায় ও নারীঘটিত বিভিন্ন অনৈতিক কাজ বেড়েই চলেছে।
এদিকে সোমবার (২৫ জুলাই) সাবিনা ইয়াসমিন নামে এক কর্মীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে ৬ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে লেবানন পুলিশ। এর আগেও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে দূতাবাসের তথ্যানুযায়ী প্রায় ৩১ জন বাংলাদেশি বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি ভোগ করছে।
গত কিছুদিন আগে দাওড়া এলাকায় প্রকাশ্যে দু’দল বাংলাদেশির মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।
লেবানন প্রবাসী রাব্বুল শেখ বলেন, যেসব জায়গায় জুয়া ও টিকটকের নামে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে, জড়িত বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দূতাবাসের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
বাংলাদেশি মিন্টু মাল বলেন, অল্প কয়েকজন বাংলাদেশির কারণে লেবাননে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে না। এ বিষয়ে দূতাবাসের জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন।
লেবাননে দূতাবাসের প্রথম সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রবাসে কিছু বাংলাদেশি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে দেশের ভাবমূর্তি ও সাধারণ প্রবাসীদের কাজের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ছে। তাদের সতর্ক করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি তারা সংশোধন না হয়, তাহলে দূতাবাস দেশ ও সাধারণ বাংলাদেশিদের স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
দূতাবাসের নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ প্রবাসী বাংলাদেশিরা দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।