রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

লুটপাটের রাজত্বে পরিণত হয়েছে দেশ

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৪:৪৭ অপরাহ্ণ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৬:১৮ অপরাহ্ণ
লুটপাটের রাজত্বে পরিণত হয়েছে দেশ

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অর্থনৈতিক খাতে সরকার চরম দুর্নীতি করছে। এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে দুর্নীতি নেই। দেশ একটি লুটপাটের রাজত্বে পরিণত হয়েছে। যেখানে যাবেন, সেখানেই দুর্নীতি-লুটপাট। মেগা প্রজেক্টে মেগা লুটপাট।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “১৯৭২-৭৫ সালে আওয়ামী লীগের একই অবস্থা ছিল। তখনও তারা লুটপাট করতো। তখন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের নামটা এখন বদলে এর নাম ‘নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি’ রাখা উচিত। আজকে তারা ঠিক লুটপাট সমিতিতে রূপান্তরিত হয়েছে। করোনায় সম্পূর্ণভাবে তারা ব্যর্থ হয়েছে। তারা টিকা সংগ্রহের কথা বলে টিকা সংগ্রহ করতে পারেনি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। অর্থাৎ, বাংলাদেশের সকল অর্জন তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।

জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আজ সোমবার বিএনপির প্রয়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার (অব.) হান্নান শাহ’র ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার পুরো প্রশাসনকে দলীয়করণ করে ফেলেছে। এই সময়টা বাংলাদেশের সবচাইতে দুঃসময়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছর হচ্ছে। এত খারাপ সময় আমরা আগে কখনও দেখিনি। আমরা স্বৈরাচার দেখেছি, আমরা একনায়কতন্ত্র দেখেছি। কিন্তু, এই যে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ গোটা জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং জাতির সমস্ত অর্জন ধ্বংস করে দিচ্ছে, এটা আমরা অতীতে কখনও দেখিনি।’

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, “আজকে মানুষ কথা বলতে পারে না, কেউ কথা বলার সাহস পায় না।  আমি কালকে একটি রেস্টুরেন্টে চা খেতে গিয়েছিলাম। আমি যাওয়ার পর সেখানে সবাই ছুটে এলো। আমরা যাদের ‘বয়-বেয়ারা’ বলি। তারা এসে বলছে, ‘স্যার আমরা কেউ গাজীপুর থেকে, কেউ ভোলা থেকে, কেউ রাজশাহী থেকে এসেছি। আমরা কেউ এলাকায় থাকতে পারছি না। আমরা মিথ্যা মামলা এবং ওদের (আওয়ামী লীগ) অত্যাচারে পালিয়ে চলে এসেছি।’ এই রকম অবস্থা বাংলাদেশে এখন শুরু হয়েছে। এ রকম ঘটনা একটা দুটো নয়। প্রায় সব জায়গায় দেখবেন আমাদের ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ছেলেরা এমনকি বিএনপির বয়স্ক লোকেরা এলাকায় থাকতে পারছে না।”

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘আজকে ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা। পাঁচশর অধিক নেতা গুম হয়ে গেছেন। সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তারপরেও তারা নির্বাচনের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে। আপনারা তো জেনেশুনে এমন একটা নির্বাচন ব্যবস্থা তৈরি করেছেন, যেখানে কেউ ভোট দিতে পারে না। আপনারা এমন একটা অবস্থা তৈরি করেছেন, যেখানে কেউ বিচার পায় না। আজকে আপনি যে কোর্টেই যাবেন, দেখবেন বিএনপি দেখলে একরকম বিচার, আর বিএনপি না হলে অন্যরকম বিচার। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের অন্ধকার সময়ের পথ প্রদর্শক বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার (অব.) হান্নান শাহের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। তিনি একজন সৈনিক ছিলেন, সৈনিকের চরিত্র যুদ্ধ করা। তিনি ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমৃত্যু যুদ্ধ করেছেন। ১/১১-এর সময় বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের যে পরিকল্পনা তা রুখে দিতে তিনি সংগ্রাম করেছেন। যার জন্য তিনি জেলেও গিয়েছেন। আজকে দেশের এই অবস্থায় তাকে আমাদের খুব প্রয়োজন ছিল।’

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম প্রমুখ।

সম্পর্কিত পোস্ট