প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা এ দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ দেশে তারা তিন বছর ধরে আছে। তাদের জন্য কক্সবাজারের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তাদের কারণে এ দেশের কিছু বনজ সম্পদও নষ্ট হয়েছে।
গতকাল রোববার নেদারল্যান্ডসের নতুন রাষ্ট্রদূত অ্যান জেরার্ড ফন ল্যুভেন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। খবর সমকালের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আটকে পড়া পাকিস্তানিরাও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করছে। নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি উদ্বাস্তু ও এনজিও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার কাছে মনে হয়েছে, রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান হতে পারে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও ডেলটা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়নে নেদারল্যান্ডসের অবদানের প্রশংসা করেন। নেদারল্যান্ডসে তার শেষ সফরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রিনহাউস পদ্ধতি ব্যবহার করে সেখানে কৃষি সামগ্রীর উৎপাদন ও সংরক্ষণ দেখে তিনি অভিভূত হয়েছেন। ডাচ রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
জলবায়ু ও জ্বালানি ইস্যুতে সাহায্য করতে চায় জার্মানি :জলবায়ু ও জ্বালানি ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে জার্মানি। ঢাকায় নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত অচিম ট্রয়েস্টার গতকাল গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও কভিড-১৯ পরিস্থিতি যথাযথভাবে মোকাবিলা করার পদ্ধতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার খুবই কম।
জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব সম্পদ দিয়ে অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রম শুরু করেছে। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জার্মানির সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক জার্মান পরিবার মুক্তিযুদ্ধের পর ‘যুদ্ধশিশু’ দত্তক নেয়।
নেপালের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ: বাংলাদেশে নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বংশীধর মিশ্র গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তুলছে। নেপাল বিমানবন্দরটি ব্যবহার করতে পারে।
তিনি নেপালকে মোংলা ও পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দেন। নেপালের রাষ্ট্রদূত তাদের কৃষি খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের সহযোগিতা চান। তিনি বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, তারা এর উন্নয়নে অভিভূত। নেপালের রাষ্ট্রদূত প্রয়োজনে সব সময় বাংলাদেশকে কাছে পাওয়া এবং পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং নেপালে ভূমিকম্প আঘাত হানার পর বাংলাদেশের চিকিৎসা সহায়তার কথা স্মরণ করেন।
অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ সময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।