বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী পালনের অংশ হিসেবে মেক্সিকো সিটিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে মেক্সিকান স্প্যানিশ ভাষায় বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) মেক্সিকোর সংসদ ভবনের নিম্নকক্ষে মেক্সিকো-বাংলাদেশ সংসদীয় ফ্রেন্ডশিপ দলের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটির ল্যাটিন আমেরিকান সংস্করণ উন্মোচন করে।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন মেক্সিকো বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী দলের সভাপতি ও মেক্সিকোর সংসদের নিম্নকক্ষের ফেডারেল ডেপুটি রোজালিন্ডা ডোমিঙ্গেজ ফ্লোরেস এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেল ডেপুটি হোসে মিগেল ডে লা ক্রুজ, মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ফার্নান্দো গঞ্জালেস সাইফে, মেক্সিকো বাংলাদেশ সংসদীয় ফ্রেন্ডশিপ দলের অন্যান্য সদস্য, বুদ্ধিজীবী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে দূতাবাসের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠান বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মধ্যেকার সংহতি আরও বাড়িয়ে তুলতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
ফেডারেল ডেপুটি ডেপুটি হোসে মিগেল ডে লা ক্রুজ এই অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে এই ল্যাটিন আমেরিকান সংস্করণের মাধ্যমে, মেক্সিকোর তরুণ রাজনীতিবিদরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আরো জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হবেন।
এ উপলক্ষে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বঙ্গবন্ধু এবং মেক্সিকোর জনক মিগেল হিদালগো ই কোস্টিয়ার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই প্রকাশনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ‘সোনার বাংলা’ সম্পর্কে লাতিন আমেরিকার পাঠকদের জ্ঞানকে আরো সমৃদ্ধ করবে যা সমগ্র জাতিকে শোষণমুক্ত, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠনে অনুপ্রাণিত করেছিল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান তার ভিডিও বার্তায় আশা প্রকাশ করেন যে এই বইটি ল্যাটিন আমেরিকার পাঠকদের এমন একটি জাতি সম্পর্কে আলোকিত করবে যা মেক্সিকো থেকে অনেক দূরে অবস্থিত হলেও সংগ্রাম এবং নিপীড়ন, দারিদ্র্য, অবিচার থেকে মুক্ত হয়ে মর্যাদাপূর্ণ এক সমৃদ্ধ জাতি পরিণত হওয়ার আকাঙ্ক্ষার দিক থেকে যার সঙ্গে তাদের মিল রয়েছে।
মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া-প্যাসিফিক বিভাগের মহাপরিচালক ফার্নান্দো গঞ্জালেস সাইফে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর মেক্সিকান স্প্যানিশ সংস্করণ প্রকাশের জন্য দূতাবাসের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। এই ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন গতির সঞ্চার করবে বলে মত প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং সার্বভৌম ও স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তার অপরিসীম অবদানের কথা তুলে ধরেন। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মেক্সিকো-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের তিনি প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে মেক্সিকোর পাঠকেরা বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের সঙ্গে তাদের সংগ্রামের সাদৃশ্যতা খুঁজে পাবেন যা বন্ধুপ্রতীম দুইটি দেশের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।