ভুলে ভরা জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই মিরসরাই উপজেলার সাধারণ জনগণের। বিশেষ করে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। এনআইডি কার্ডের সাথে পাসপোর্টের তথ্য মিল না থাকলে নবায়ন করতে পারছেন না ১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট। এনআইডি সংশোধন করতে গেলেও পাচ্ছেন না সেবা। বরং নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক সেবা গ্রহীতা।
সরেজমিনে গিয়ে উপজেলা নির্বাচন কমিশনের সামনে দেখা যায় মানুষের জটলা। কারো পরিচয়পত্রে নামে ভুল তো কারো বয়সে হেরফের। কারো বা আবার ভুল পিতামাতার নাম। আবার কারো বাংলা নামের সাথে মিল নেই ইংরেজি নামের। বাড়ির নাম গ্রামের নামের বানান ভুল তো আছেই। এসমস্ত সমস্যার কারণে বিড়ম্বনায় পড়ছেন জনগণ। এ সমস্ত ভুলে ভরা জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে গিয়ে দিশেহারা তারা।
নির্বাচন কমিশন অফিসের উপরতলা নিচতলা ফাইল হাতে ছোটাছুটি করতে দেখা যায় এক বয়স্ক লোককে। কথা হয় তার সাথে। নাম মো: রিদওয়ান। উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের পূর্ব দূর্গাপুরের বাসিন্দা তিনি। তিনি বলেন, এনআইডির তথ্য সংশোধনের জন্য তিনি এ পর্যন্ত ১৬ দিন ধর্ণা দেন নির্বাচন কমিশন অফিসে। কোন দিন নির্বাচন কর্মকর্তা থাকেন না, আবার কোন দিন এ ডকুমেন্ট সে ডকুমেন্টোর জন্য ফিরিয়ে দেয়া হয়।
বারইয়ারহাটের গিয়াস উদ্দিন নামের একজন জানান, ছেলে ভোটার হলেও তার কোন তথ্য নেই নির্বাচন কমিশনের সার্বারে। তাই আবার নতুন করে অনলাইন ভোটার আবেদন করেছেন তিনি। এরমধ্যেও বিভিন্ন সনদ ও প্রত্যয়নের জন্য বারবার হয়রানির শিকার হয়েছেন তিনি।
এক প্রবাসী নুরুল করিম বলেন, তার এনআইডি কার্ডে ইংরেজী বানান ঠিক থাকলেও বাংলা নামে এসেছে নুরুল কবিম। ব এর স্থলে র সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে গেলে তাকে এপ্রিলের ১ তারিখের পর আসতে বলা হয়। তিনি আরো বলেন, একটা সংশোধনের জন্য দু মাস অপেক্ষা করা লাগলে আমার বিদেশ যাত্রায় ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।
গ্রাহক হয়রানির কথা অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারুক হোসাইন বলেন, গ্রাহক হয়রানির বিষয়টি সত্য নয়। আবেদনকারীরা যথাযথ নিয়ম না মেনে বা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাবমিট না করার কারণে তাদের সংশোধন আবেদন নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয় না। আমার অফিস শুধু মাত্র ‘ক’ ক্যাটাগরির আবেদনের নিষ্পত্তির জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত। ‘খ’ এবং ‘গ’ ক্যাটাগরির আবেদন নিষ্পত্তি জেলা ও বিভাগীয় অফিস করে।
তিনি আরো বলেন, গত ১ বছরে আমাদের অফিসে ৩৮৮৩ টি সংশোধন আবেদন এসেছে। তার মধ্যে ৩০৮৩ টি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বাকী ৮০০ আবেদন নির্বাচনী জটিলতার কারণে এখনো নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। তবে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে সবগুলো আবেদন নিষ্পত্তি করা হবে।