মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে আব্দুল কাইয়ুম (৫৫) নামের এক বাংলাদেশির মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে। মরদেহটি দেশে আনতে হলে যে লাখ টাকার প্রয়োজন সে অর্থ পরিবারের পক্ষে জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা করাসহ কাইয়ুমের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম দেশ-বিদেশের বিত্তবানদের আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মাঝিকারা গ্রামের মো. কফিল উদ্দিনের ছেলে আব্দুল কাইয়ুম ২০০৮ সালে ভাগ্য বদলের আশায় কলিং ভিসায় মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। গত শনিবার (৫ মার্চ) দুপুর ১২টায় অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে কাইয়ুম মারা যান। তিনি কুয়ালালামপুর দামানসারা উতমা এলাকায় বসবাস করতেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. রাসেল শিকদার বলেন, কাইয়ুমের হার্ট অ্যাটাকের খবর পেয়ে তার বাসায় গিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
কাইয়ুমের স্ত্রী ও দুই মেয়েসন্তান রয়েছে। মালয়েশিয়ায় চাকরি করে বিভিন্ন কারণে প্রতারিত হয়েও তিনি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেননি। এমনকি দেশের বাড়িতে নিজের কোনো ভিটেমাটি নেই। ভিসা করতে না পারায় মারা যাওয়ার সময়ে তার বৈধ ভিসা ছিল না। এজন্য তার মরদেহটি দেশে পাঠাতে দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেতে হবে।
মালয়েশিয়ায় তার কোনো নিকটাত্মীয় না থাকায় যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্নকরণে এগিয়ে এসেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অ্যাসোসিয়েশন ও মালয়েশিয়া প্রবাসীরা।
কাইয়ুমের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, স্বামীর মৃত্যুতে তিনি খুবই অসহায় হয়ে পড়েছেন। ১২-১৩ বছর প্রবাসে থেকেও নিজের থাকার বাড়িটিও করতে পারেনি। তার কোনো ছেলেসন্তান নেই। এখন দুই মেয়ে নিয়ে তিনি কোথায় যাবেন, কী করবেন?
কাইয়ুমের একটা সময় জায়গা জমি সবই ছিল এখন কিছুই নেই। আমি এখন আমার বাপের বাড়ি থাকি, কাইয়ুমের এখনও ৭-৮ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে। এগুলো কীভাবে পরিশোধ করবো চোখে মুখে অন্ধকার দেখছি। মালয়েশিয়া প্রবাসীদের কাছে আন্তরিক সহযোগিতা চেয়েছে কাইয়ুমের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম বাবুল জানান, একটা সময় কাইয়ুমের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল। বিভিন্ন কারণে তার আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। বর্তমানে তার পরিবারের অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের সংগঠনের সদস্যসহ প্রবাসীদের কাছে অর্থিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। কাইয়ুমের মরদেহ দেশে পাঠাতে ১ লাখ টাকার প্রয়োজন। তাছাড়া তার পরিবারের চলার মতো কিছু অর্থ সহযোগিতা করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমরা টাকা সংগ্রহ শুরু করেছি। যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি আর্থিক সাহায্য করতে চান তাহলে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছেন মালয়েশিয়াস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম বাবুল।
সংলাপ ০৭/০৩/০০৮ আজিজ