বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা সভা এবং ম্যারাথন ও সাইক্লথনের আয়োজন করেছে নগরীর সর্ববৃহৎ হাসপাতাল এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম। এতে আলোচকরা ‘ইউজ হার্ট ফর অ্যাকশন’ এর বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা, মতামত ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। হার্টের সুস্থতা ও কার্ডিওভাস্কুলার রোগ সম্পর্কে জনমনে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এই আয়োজন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন-এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামের সিওও সামির সিং; ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসাল্টেন্ট ও বিভাগীয় কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ডা. শেখ মোহাম্মদ হাছান মামুন; ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসাল্টেন্ট ডা. জহিরউদ্দিন মাহমুদ ইলিয়াস; এবং ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসাল্টেন্ট ডা. তারেক বিন আব্দুর রশিদ প্রমুখ।
ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে ম্যারাথন এবং সাইক্লথনসহ আউটডোর কর্মসূচীগুলোয় সব বয়সের মানুষের স্বতঃফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা গেছে। ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটিজের মাধ্যমে হার্ট সুস্থ রাখার প্রত্যয়ে দুই ইভেন্টেই সবার মধ্যে হাই-এনার্জি ও এক্সাইটমেন্ট লক্ষ্য করা যায়, যা হার্ট সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়ামের গুরুত্ব তুলে ধরে।
বক্তৃতাকালে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর সিওও সামির সিং বলেন, “বর্তমান বিশ্বে হার্টের রোগ বা হৃদরোগ মৃত্যুর এক নম্বর কারণ। বিশ্বব্যাপি প্রতিবছর হৃদরোগ ও স্ট্রোকের কারণে প্রায় ২ কোটি জীবন ঝরে যায়, যার অধিকাংশই ব্যক্তির স্বাস্থ্যসচেতনতা দ্বারা প্রতিরোধ করা সম্ভব। আসুন সময় থাকতে সবাই সতর্ক হই, সচেতন হই এবং হৃদরোগ মুক্ত পৃথিবী গড়ার শপথ নেই।”
অধ্যাপক ডা. শেখ মোহাম্মদ হাছান মামুন বলেন, “ইউজ হার্ট ফর অ্যাকশন বলতে আমরা বোঝাচ্ছি, হার্টের রোগ প্রতিরোধে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে। অন্যান্য রোগ থেকে হৃদরোগে মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেশি, তাই সরকার ও সংশ্লিষ্টদের হৃদরোগ চিকিৎসাকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি কেন্দ্রীয় পলিসি গ্রহণ করতে হবে এবং এ বিষয়ে সবাইকে সম্মিলিতভাবে আওয়াজ তুলতে হবে।”
ডা. জহিরউদ্দিন মাহমুদ ইলিয়াস বলেন, “হৃদরোগের যে কারণটি নিয়ে সচরাচর কথা হয়না তা হলো বায়ুদূষণ। হার্ট-অ্যাটাক, হৃদরোগ, ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকি ও মৃত্যুঝুঁকি বায়ুদূষণের কারণে বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মানুষ এ বিষয়ে অসচেতন। তাই পরিবেশ উন্নয়নেও সচেতন হতে হবে এবং পরিবেশবিধ্বংসী কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম ও তৎপরতা জোরদার করতে হবে।”
ডা. তারেক বিন আব্দুর রশিদ বলেন, “বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান স্বাস্থ্য উদ্বেগ হলো কার্ডিওভাসকুলার রোগ। তবে লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে এই রোগগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিয়মিত ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত মেডিকেল চেক-আপ করলে হার্ট সুস্থ থাকে। আজকের ম্যারাথন ও সাইক্লথন আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বলতে চাই, শুধুমাত্র হৃদরোগের জন্য নয়, বরং সার্বিক সুস্থতার জন্য আমাদের দৈনন্দিন ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটিজ করা প্রয়োজন।”
প্রসঙ্গত, এভারকেয়ার চট্টগ্রাম, বন্দরনগরীর সর্বপ্রথম ৪৭০ শয্যাবিশিষ্ট মাল্টি-ডিসিপ্লিনারী সুপার-স্পেশিয়ালিটি টারশিয়ারি কেয়ার হসপিটাল। এখানে আছে ২৪/৭ জরুরী বিভাগ, সর্বাধুনিক আইসিইউ সেবা এবং ২৭টি বিশেষ ও উপ-বিশেষ বিভাগ, যা গোটা অঞ্চলের ধারণক্ষমতার শূন্যস্থান পূরণে সক্ষম। প্রায় ৪ লক্ষ ৯২ হাজার বর্গফুট আয়তনের উপর নির্মিত এই হসপিটালের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ মেডিকেল সেবা ও পাঁচ শতাধিকেরও বেশি মেডিকেল প্রোফেশনাল চট্টগ্রামের সকল স্তরের রোগীদের সর্বোচ্চ মানের সেবা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।