জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু বিশ্বসভায় বাঙালি জাতিকে আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। নতুন প্রজন্ম যে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখছে, যে আলোকিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে, সেই পথ বঙ্গবন্ধু প্রস্তুত করে দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু বাংলার ইতিহাসে ধ্রুব তারার মতো উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন।’
বুধবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। এছাড়া মুখ্য আলোচক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বক্তব্য দেন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে এ অনুষ্ঠানে মহিউদ্দীন খান আলমগীর এবং জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বক্তব্য দেন।
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এ দেশকে একটি লাল সবুজের পতাকা, একটি অনন্য সংবিধান এবং জাতীয় সংসদ উপহার দিয়েছেন। এ দেশের ইতিহাস জানতে হলে নতুন প্রজন্মকে শেকড়ে ফিরে যেতে হবে এবং ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সংগঠিত সব সংগ্রাম উপলব্ধি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন মহাজাগরণের পথিকৃৎ। ব্যক্তিগত জীবনের সব চাওয়া পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে দেশের জন্য কাজ করেছেন তিনি।’
স্পিকার বলেন, ‘ক্ষমতার প্রতি বঙ্গবন্ধুর কোনো আকর্ষণ ছিল না বলেই তিনি বলেছিলেন- ‘আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, আমি এ দেশের মানুষের অধিকার চাই।’
স্পিকার আরও বলেন, ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরের দিন বঙ্গবন্ধু সংবিধান রচনার কাজ হাতে নিয়েছিলেন এবং নয় মাসের মধ্যে বাঙালিকে তাদের নিজস্ব সংবিধান দিয়েছিলেন। তার প্রতিটি কাজের পেছনেই অকাট্য আইনগত ভিত্তি ছিল। তিনি জনগণের মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতেই সংবিধান প্রণয়নের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও সত্তায় প্রোথিত ছিল দেশপ্রেম। তাই ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের আদর্শ ও দর্শনের সম্মিলিত প্রতিফলন ঘটেছে।’
এসময় স্পিকার এ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানান।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তিনি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।’
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ও সব শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সব পর্যায়ের সদস্য, আমন্ত্রিত অতিথি, গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং গণমাধ্যম কর্মীরা।