
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের ভার্চুয়ালি প্রতিবাদ সভা বুধবার (২ মার্চ) স্থানীয় সময় রাত ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মালয়েশিয়া প্রবাসীদের মারধর, চাকরিচ্যুত, হুমকি-ধামকি ও দেশবিরোধী তৎপরতার প্রতিবাদে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে বিএসইউএমের সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে হয়েছে, মালয়েশিয়ায় নকশাবন্দি জিকিরের নামে পাচার হচ্ছে রোহিঙ্গা। আর এসবের পেছনে কাজ করছে মুহাম্মাদ বিন জাফর আহমেদ। তার কাছে রয়েছে বাংলাদেশি পাসপোর্টও।
পাসপোর্ট অনুযায়ী জাফরের স্থায়ী ঠিকানা টেকনাফ, কক্সবাজার ও ইউএন কার্ডে মিয়ানমারের নাগরিক মুহাম্মাদ বিন জাফর আহমেদ নামে পরিচয় পাওয়া যায়।
এতে বিএসইউএমের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলমগীর চৌধুরী আকাশের সঞ্চালায় সভাপতিত্ব করেন বিএসইউএমের সভাপতি মোহাম্মদ বোরহান উদ্দীন।
জানা গেছে, ২০১৬ সাল থেকে জাফর নকশাবন্দি জিকির মজলিশের আমন্ত্রণপত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশের টেকনাফ হয়ে শত শত রোহিঙ্গা পাচার করেছে মালয়েশিয়ায়। পাচারের সময় প্রতিজন দুই থেকে আড়াই লাখ করে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে জাফরের বিরুদ্ধে।
তাকে কোন কিছু বললেই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মারধর করবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন। মারধরের অভিযোগ এনে সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় কয়েকটি পুলিশ রিপোর্টও করা হয়েছে।
২০১৫ ও ২০১৬ সালে উলুলাঙ্গাত মিফতাহুল উলুম কাযাঙ্গ, কুয়ালালামপুর মাদরাসায় অবৈধ চাকরি থাকাকালীন তিনি ওই মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষককে দু’ভাগে বিভক্ত করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাদরাসা থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
কে এই জাফর?
মুহাম্মাদ বিন জাফর আহমেদ নামে পরিচয়দানকারী এই ব্যক্তি দুবাই থাকাবস্থায় পাকিস্তানি বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক এবং নিয়মিত পাকিস্তান আসা-যাওয়া করতেন। ওই সময় পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠীর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেয়। দুবাই সরকার তাকে জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করে ২০১২ সালে দুবাই থেকে বের করে দেওয়া হয়।
সেখানে কোটি টাকা লুট করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পথে বসিয়েছে এমন অভিযোগও রয়েছে। ওইসব ভুক্তভোগীরা ২০১২ সালে টেকনাফের নীলা এলাকায় আটক করলে পরে স্থানীয় এক মাওলানার সহযোগিতায় ছাড়া পেয়ে নতুন পাসপোর্ট করে ২০১৩ সালে মালয়েশিয়া পালিয়ে যায়। (সূত্র: দৈনিক দৈনন্দিন, ২রা এপ্রিল, ২০১৬)।
২০১৬ সাল থেকে নকশাবন্দি জিকির মজলিশের আমন্ত্রণের নামে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা পাচারের পাশাপাশি বাংলাদেশে পাকিস্তানভিত্তিক উগ্র রাজনৈতিক মুভমেন্ট তৈরিতে গোপন বৈঠক ও লেভেল ফিল্ড তৈরি করছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে। মাওলানা মুহাম্মদ বিন জাফরের রয়েছে একটি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ (আরসা)।
এছাড়া বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের এক শক্তিশালী সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরি করে যাচ্ছে, (সূত্র: দৈনিক দৈনন্দিন, ২রা এপ্রিল, ২০১৬)।
জানা গেছে, বহুরূপী জাফর রোহিঙ্গাদের কাছে গিয়ে নিজকে রোহিঙ্গা আবার বাংলাদেশিদের কাছে গিয়ে বাংলাদেশি মাওলানা মুহাম্মদ বিন জাফর পরিচয়ে মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন জায়গায় প্রবাসীদের মারধর, হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।
যা পাঁচটি পুলিশ রিপোর্ট থেকে বেরিয়ে আসছে তার অপকর্ম। জাফরের বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাতিলসহ তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী প্রবাসীরা।
সংলাপ- ০২/০৩/০০৬ আজিজ