শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু হত্যার রায়ের মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ | ৪:০১ অপরাহ্ণ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ | ৪:০১ অপরাহ্ণ
বঙ্গবন্ধু হত্যার রায়ের মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়

বাংলাদেশে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি শুরু হয়েছিল, উচ্চ আদালতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার রায় ঘোষণার মাধ্যমে সেটা দূর হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, উচ্চ আদালতে বিচাপতি খায়রুল হক এবং বিচারপতি তোফাজ্জল সাহেব রায় দিয়েছিলেন বলেই আমরা সেই রায় কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছিলাম। আদালতে রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার ধারাটা প্রবর্তন করা সম্ভব হয়েছিল।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনের ৫৯তম বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজ (সোমবার) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে, আইনের শাসন আমরা নিশ্চিত করব। বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করব। কারণ, আমরাই ভুক্তভোগী। বিচার পাওয়ার অধিকার আমরা হারিয়েছিলাম। আমরা যখন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছিলাম সেখানে অনেক বাধা এসেছিল। সেই বাধা অতিক্রম করে সেই অর্ডিনেন্স বাতিল করে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের হত্যার বিচারের কাজ শুরু করি। বিচারের রায় যেদিন দেওয়ার কথা সেদিন বিএনপি-জামায়াত হরতাল ডেকে ছিল। যাতে জজ সাহেব কোর্টে যেতে না পারেন, রায় দিতে না পারেন। তাছাড়া তার ওপরে অনেক জুলুম অত্যাচার করা হয়েছিল। তিনি অত্যন্ত সাহসী একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি কোনো কিছু মানেননি। সেই রায় গোলাম রসুল সাহেব দিয়ে যান।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার গঠন করি। আবার বিচার শুরু হয়। তখনও অনেক বাধা আমাদের ছিল। যা হোক আল্লাহর রহমতে বিচার করে সেই রায় আমরা পেয়েছি, রায় কার্যকর করা হয়েছে। কিছু এখনও ফিউজিটিভ আছে। অনেকের খবর আমরা জানি।

সরকারপ্রধান বলেন, ডিসেম্বর মাস আমাদের বিজয়ের মাস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা বিজয় পেয়েছি, স্বাধীনতা পেয়েছি, স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছিলাম।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়েও অনেক বাধা-বিঘ্ন হয়। শুধু দেশে না, অনেক বড় বড় দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এই বিচারের অনেক বাধা দেওয়ার চেষ্ট করে। আবার কেউ কেউ তো সরাসরি আমার সঙ্গে টেলিফোনে কথাও বলে। এই ধরনের চাপ কিন্তু সব সময় ছিল, তারপরও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমরা করতে পেরেছি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, যারা বিচার করবে তাদের নিরাপত্তা, তাদের কাজ করার সুবিধা যাতে হয় সেদিকে আমাদের বিশেষ দৃষ্টি আছে। সুপ্রিম কোর্টে বিজয় ৭১ ভবন, সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামসহ অন্যান্য অবকাঠামো করে দিয়েছি। আমরা সেটাই চাই যে, যারা বিচার করবেন এবং যারা বিচার চাইতে আসবে, সকলে যেন একটা সুষ্ঠু পরিবেশ পায়। ভালো পরিবেশ পেলে চিন্তা করারও একটা সুযোগ হয়। সঠিক চিন্তা করেই বিচার করতে হয়। এটা একটা কঠিন কাজ। কাজে সেই কাজটা যেন সহজ হয় সেই ব্যবস্থা করা আমাদের দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্ব যখন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদে একেবারে বিধ্বস্ত, বাংলাদেশে কিন্তু একটাই ঘটেছে। সেই হোলি আর্টিসান।

সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।

সম্পর্কিত পোস্ট