জাতিসংঘে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের দিন ২৫ সেপ্টেম্বরকে এবারও ২০২১ সালের জন্য ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় বছরের মতো ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারি সিনেটর স্টেভেস্কি বিলটি নিউ ইয়র্ক স্টেটের আইন পরিষদে উত্থাপন করেন। ২৬ জানুয়ারি সর্বসম্মতভাবে বিলটি পাস হয়। এটির সিনেট রেজ্যুলেশন নম্বর জে-০০১৯৭। নিউইয়র্ক স্টেট সেক্রেটারি আলেন্ড্রো এন পলিনো গত ১৪ মার্চ স্টেট গভর্নর স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্রের কপি ২০ জানুয়ারি বিতরণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মুক্তধারার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও বিশ্বজিত সাহা শুক্রবার জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে মুক্তধারার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্যে আরেকটি বিষয় হলো তৃতীয়বারের মতো নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট এই বিলটি পাশ করা।
দিনটিকে পালন করার জন্য গ্রুপ অব মুক্তধারা আগামি ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারায় বাংলাদেশের বন্ধুরা ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সফররত বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করবেন।
১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ছিল নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশন। অধিবেশন কক্ষে সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রনায়ক ও সরকার প্রধানরা। অধিবেশনে সভাপতির আসনে আলজেরিয়ার মুক্তি সংগ্রামের নেতা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকা। তিনি ‘বাঙালি জাতির মহান নেতা’ হিসেবে পরিচিতি দিয়ে বক্তৃতা মঞ্চে আহ্বান করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
বাঙালির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু আরোহণ করলেন বক্তৃতা মঞ্চে। প্রথম এশীয় নেতা, যিনি এই অধিবেশনে সবার আগে ভাষণ দেবেন। দৃপ্ত পায়ে বক্তৃতা মঞ্চে উঠে ডায়াসের সামনে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বক্তৃতা শুরু করেন মাতৃভাষা বাংলায়। যে ভাষার জন্য ঢাকার রাজপথে বাঙালি বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। সেই ভাষায় প্রথম ভাষণ দেন জাতিসংঘে। এভাবে বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষাকে বিশ্ব দরবারে আবার ঠাঁই করে দিলেন। এর আগে ১৯১৩ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল প্রাপ্তির মধ্যদিয়ে বিশ্ববাসী জেনেছিল বাংলা ভাষার অমর আবেদন। এর ষাট বছর পর ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে উচ্চারণ করলেন বিশ্বসভায় বাংলা ভাষার অমর শব্দগুচ্ছ।