ফেনীর বহুল আলোচিত ব্যবসায়ী কায়সার মাহমুদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত স্ত্রী শাহনাজ আক্তার নাদিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায় এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে জেলা দায়রা জজ আদালত। বৃহস্পতিবার (২৩সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফেনী জেলা ও দায়রা জজ ড. জেবুন্নেছার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় একমাত্র আসামি নিহতের স্ত্রী নাদিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায় ঘোষণার পর মামলার বাদী নিহত কায়সারের পিতা আবুল খায়ের বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। মামলায় নাদিয়ার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হওয়ার উচিত ছিল,আমরা সুবিচারের জন্য উচ্চ আদালতে যাবো।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফেজ আহমাদ বলেন, কায়সার হত্যাকাণ্ডের সাথে নাদিয়া জড়িত এবিষয় আমরা আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এ রায়ের ফলে ভবিষ্যতে কেও এমন অপরাধ করতে সাহস পাবে না।
অপরদিকে আসামীপক্ষের আইনজীবী আহসান কবির বেঙ্গল বলেন, ১৬৪ ধারা জবানবন্দীর ওপর ভিত্তি করে এ রায় দেয়া হয়েছে। আমরা ন্যায় বিচার পাইনি, আমরা যথাযথ বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
আদালত ও তদন্ত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় ডাক্তারের চেম্বার থেকে বাসায় ফেরার পথে পুরাতন রেজিষ্ট্রি অফিসের সড়কের ভূঁঞা বাড়ি সংলগ্ন পুকুর পাড়ের নির্জন স্থানে ব্যবসায়ী কায়সারকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। এসময় নিহতের সাথে তার স্ত্রী নাদিয়া উপস্থিত ছিলেন। এঘটনায় নিহতের পিতা আবুল খায়ের বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ততকালিন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. আলমগির হোসেন ২০১৫ সালের ৩০ অক্টোবর মো.হারুন ও নাদিয়াকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করে। বাদী নিহতের পিতা প্রফেসর আবুল খায়ের আদালতে আপত্তি জানালে আদালত পুনঃতদন্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। এসআই মো. আলমগির বদলি হওয়ায় তদন্তের দায়িত্ব আসে এসআই কামরুল ইসলামের ওপর তিনি নাদিয়াকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করে। এ ঘটনায় নাদিয়াকে আটক করা হলে সে ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে কায়সারকে একাই হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দী দেয়।
উল্লেখ্য,এ মামলার অপর আসামী বন্দুয়া দৌলতপুর গ্রামের মৃত মো. হাফেজের ছেলে মো. হারুন একই বছর আগষ্ট মাসে দূর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়।
রায়ের বিলম্বের বিষয়ে আদালতের বেঞ্চ সহকারি মো.আলতাফ হোসেন জানান, গত ২৪ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার তারিখ ধার্য করে আদালত। করোনার কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।