মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পুনরায় সিআইপি হলেন রাউজানের কৃতী সন্তান শেখ ফরিদ

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২১ | ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২১ | ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ
পুনরায় সিআইপি হলেন রাউজানের কৃতী সন্তান শেখ ফরিদ

বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ( সিআইপি) হিসেবে পুনরায় স্বীকৃতি পেয়েছেন চট্টগ্রামের রাউজানের কৃতী সন্তান শেখ ফরিদ আহমেদ।

গত বুধবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ রেহান উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ২০১৯ সালের নতুন সিআইপিতে তালিকা ঘোষণা করা হয়। এতে পুনরায় স্থান পান রাউজানের এই কৃতী সন্তান। এই নিয়ে দুইবার সিআইপি নির্বাচিত হলেন তিনি। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এবার ( সিআইপি) হয়েছেন ২৬ জন। সারাবিশ্বে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে (সিআইপি) নির্বাচিত হয়েছে মোট ৫৭ জন। এরমধ্যে বেশী সংখ্যক (সিআইপি) আরব আমিরাতের। তন্মধ্যে অন্যতম হলেন শেখ ফরিদ আহমেদ। যিনি একাধারে বাংলাদেশ কমিউনিটি ও অসহায় প্রবাসীদের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার এই মর্যাদায় গর্বিত রাউজানবাসীও।

টগবগে তারুণ্য আর চোখে অনাবিল স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে শাণিত মেধার ব্যয়। সবমিলিয়ে একজন পরিপক্ক বিজনেস মেকার তিনি। নিজের পরিশ্রম, মেধা আর যোগ্যতায় সাফল্যের শেকড় থেকেই শিখরে পৌঁছে গেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী শেখ ফরিদ আহমেদ সিআইপি।

লোকমুখে তিনি সফল ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ। ২০১৮ সালে যে ক’জন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ব্যবসায়িক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) মনোনীত হয়েছিলেন সেই তালিকায়ও অন্যতম নামটি ছিল তার। ব্যবসায়িক সাফল্যের দ্যুতি ছড়িয়ে তিনি আমিরাতের বুকে হয়ে উঠেন রাউজানবাসীর গর্বের প্রতীক।

আরব আমিরাতের সবুজে ঘেরা নগরী আল আইন শহরে বসবাস তার। তাপমাত্রার দিক থেকে তুলনামূলক শীতল ওই শহরটিকে প্রবাস জীবনের শুরু থেকে বসবাসের জন্য বেছে নিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই ব্যবসার গোড়াপত্তন। ব্যবসার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছেও ধীরে ধীরে তিনি হয়ে উঠেন পছন্দের পাত্র। একসময় নেতৃত্বে আসেন সেখানকার কমিউনিটির। সংগঠিত করেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রবাসীদের।

মানুষের দুর্দশায় পাশে দাঁড়ানো, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে প্রবাসীদের সচেতন করা, বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বিদেশের মাটিতে তুলে ধরা এবং দেশকে গৌরবান্বিত করতে সকল প্রবাসীদের নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন গর্বিত এই রেমিটেন্স সৈনিক। যা একটি দেশকে মর্যাদার আসনে বসাতে খুবই প্রয়োজন।

মূলত ব্যবসায়িক লক্ষ্যে আমিরাতে ছুটে আসেন তিনি। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত তাই কাজে লাগাতে তার অসাধারণ পরিকল্পনা। যার ফলে জীবন হয়েছে সাবলীল আর দেশকে করছেন অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ। ১৯৮৫ সালে আরব আমিরাত আসনে শেখ ফরিদ। রাউজান থানার পাচখাইন গ্রামের মরহুম হাজী সুলতান আহাম্মদ ও মরহুমা বেগম ইসলাম খাতুনের মেঝ ছেলে তিনি। বড় ভাই মরহুম হাজী ছালে আহাম্মদ ও ছোট ভাই শেখ আহাম্মদ সাথে থাকার কারণে রাজনীতি ছেড়ে আসা শেখ ফরিদের প্রবাসে বসবাস অনেকটা সহনশীল হয়ে উঠে।

কৈশোরে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এই ব্যবসায়ী। আশির দশকে দাপুটে ছাত্রনেতা হিসেবে চট্টগ্রামের রাজনীতির ময়দানে উত্তাপ ছড়াতেন তিনি। ছিলেন উত্তর চট্টগ্রামের ইমাম গাজ্জালী ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস। ওই নেতৃত্ব গুণাবলী প্রবাসের মাটিতেও প্রতিষ্ঠিত করেছেন তাকে কমিউনিটির নেতা হিসেবে। বর্তমানে তিনি আন্তর্জাতিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত ইয়ুথ বাংলা কালচারাল ফাউন্ডেশন ইউএইর প্রধান পৃষ্ঠপোষক, বাংলাদেশ সমিতি দুবাইয়ের ডাইরেক্টস অব বোর্ডের কো চেয়ারম্যান, রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, আল আইন বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।

১৯৮৫ সালে শেখ ফরিদ কন্ট্রাকটিং ব্যবসার সাথে যুক্ত হলেও ১৯৯৮ সালে এসে তিনি শুরু করেন রিয়েল এস্টেট ব্যবসা। এই ব্যবসায়ই তাকে সফলতার শীর্ষে নিয়ে আসে। বর্তমানে তার রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বিস্তার লাভ করেছে পুরো আল আইন অঞ্চলে। ব্যবসায়িক সফলতার নিদর্শন স্বরূপ বাংলাদেশ সরকার থেকে পাওয়া সিআইপি মর্যাদা তাকে দিয়েছে অনন্য উচ্চতা। এর পেছনে সহায়ক ও ব্যবসায়িক অনুপ্রেরণা দানকারী হিসেবে আধুনিক রাউজানের উন্নয়নের রূপকার, সংসদ সদস্য ও রেল মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর অবদানের কথা স্বীকার করেন তিনি। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর অনুপ্রেরণায় বহির্বিশ্বে অবস্থানরত রাউজানের মানুষজন রাউজানকে সমৃদ্ধ করতে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন শেখ ফরিদ।

রাউজানের কৃতী সন্তান শেখ ফরিদ রাউজানসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বহুদিন থেকে সামাজিক অবকাঠামো এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন। তিনি নিজ এলাকায় শিক্ষার আলোকবর্তিকা ছড়িয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ডা. এম এম সি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়। বর্তমানে তিনি ওই বিদ্যালয়ের ডিসি কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

আরব আমিরাতে যে ক’জন প্রবাসী জীবনের প্রয়োজনে অর্থ সঞ্চয়ের পাশাপাশি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ও কমিউনিটিতে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছেন তাদের মধ্যে শেখ ফরিদ এক উজ্জ্বল নাম ও দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশ সরকারের দেয়া সিআইপি সম্মাননার চেয়েও মানুষের ভালবাসা ও কল্যাণে নিবেদিত হয়ে কাজ করা তার কাছে তাই অধিকতর মূল্যবান।

সম্পর্কিত পোস্ট