বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বিজিত স্বাধীন সার্বভৌম এক ভূখন্ডের নাম বাংলাদেশ। লাল সবুজের নিশানা তুলে বিশ্ব পরিমন্ডলে জয়জয়কার তুলে নিজস্ব স্বত্বায় বিকশিত হয়েছে এ দেশ ও দেশের জনগণ। স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজেদের একতা ও ক্ষিপ্রতা দেখালেও শান্তি প্রিয় একটি জাতির নাম বাঙালী। বাকীটা সবার জানা। এবার সেই বাংলাদেশের গল্প নয়। বলবো সমুদ্রের বুকে জেগে ওঠা আরেকটি বাংলাদেশের গল্প। কোন প্রকার যুদ্ধ, সংগ্রাম কিংবা রক্ত ছাড়ায় এই বাংলাদেশ জায়গা করে নিয়েছে বিশ্ব মানচিত্রে। তাই তো নেই কোন সরকার, হয়নি রাষ্ট্রকাঠামো। আপাতত পারস্য উপসাগরের গভীর থেকে লাখ লাখ টন বালু আর কংক্রিট ঢেলে তৈরি করা হয়েছে এই দ্বীপপুঞ্জ। বাংলাদেশ নামক এই দীপপুঞ্জকে উল্লেখ করা হয়েছে “বাংলাদেশ সিটি অফ পিস” বা শান্তির শহর বাংলাদেশ নামে। এটির অবস্থান সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক ও অভিজাত শহর দুবাইয়ের উপকূলীয় সীমানায় থাকা পারস্য সাগরের বুকে। তবে সহসাই এ দেশে বসবাস কিংবা ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন না কেউ। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে দুবাইয়ের “দ্যা ওয়ার্ল্ড আইল্যান্ড”। কিন্তু বেশিরভাগ দ্বীপ এখনো বালুচর ছাড়া আর কিছু নয়। কোন কোন দ্বীপে হোটেল, শপিং মল এবং অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করা হচ্ছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে সেখানকার কার্যক্রম শুরু হতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু দিন।
উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী, এই ব্যয়বহুল প্রকল্পটির নাম দ্যা ওয়ার্ল্ড বা দ্যা ওয়ার্ল্ড আইল্যান্ড। আরবিতে জুজুর আল-আলাম। পারস্য উপসাগরের জলে নয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ছয় কিলোমিটার প্রস্থের এই বিশ্ব মানচিত্রের আকারে নির্মিত ছোট কৃত্রিম দ্বীপের একটি দ্বীপপুঞ্জ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই উপকূলে অবস্থিত। এটি মূলত দুবাইয়ের অগভীর উপকূলীয় জলাশয় থেকে জলাবদ্ধ বালির সমন্বয়ে গঠিত। এই প্রকল্পের ডেভেলপার নাখিল প্রোপারটিস। প্রকল্পটি মূলত দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম পরিকল্পনা করেছিলেন। দুটি ডাচ বিশেষজ্ঞ সংস্থা ভ্যান ওর্ড এবং বসকলিসের যৌথ উদ্যোগে এটি উন্নয়নের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছিল। যারা এরআগে দুবাইয়ের “পাম জুমেরাহ” তৈরি করেছে।
আরও জানা যায়, ২০০৮ সালে আর্থিক সঙ্কটের কারণে থেমে যাওয়ার আগে ২০০৩ সালে ৩০০ টি দ্বীপ জাগিয়ে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। যদিও ২০০৮ সালে ৬০ শতাংশ দ্বীপ বেসরকারী ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি হয়েছিল। তবে বেশিরভাগ দ্বীপের উন্নয়ন কাজ শুরু করতে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০১২ সালের জুলাই পর্যন্ত লেবানন দ্বীপটি একমাত্র দ্বীপ যা বাণিজ্যিকভাবে বিকাশ লাভ করেছিল। এটি ব্যক্তিগত, কর্পোরেট ইভেন্ট এবং পাবলিক পার্টির জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। ২০১৩ সালের শেষদিকে দ্বীপগুলির মধ্যে কেবল দুটিরই বিকাশ ঘটেছে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ক্লেইন্ডিয়েনস্ট গ্রুপ হার্ট অফ ইউরোপ প্রকল্প চালু করার ঘোষণা দেয়। পরের মাসে প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম ব্র্যান্ড জে কে প্রোপার্টিস তাদের মাসিক নিউজলেটারে ঘোষণা করেছিল যে প্রকল্পটির “কাজ ভাল চলছে”। দ্বীপের এই সিরিজের প্রথমটি হলো ইউরোপ, সুইডেন এবং জার্মানি। এটি ক্লেইন্ডিয়েনস্ট গ্রুপের নেতৃত্বে নির্মাধীন।