বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পাখির সন্ধান দিলে ৫০ হাজার পুরস্কার

প্রকাশ: ৭ অক্টোবর ২০২১ | ২:৪২ অপরাহ্ণ আপডেট: ৭ অক্টোবর ২০২১ | ২:৪২ অপরাহ্ণ
পাখির সন্ধান দিলে ৫০ হাজার পুরস্কার

হারিয়ে গেছে একটি ‘সান কন্যুর’ প্রজাতির টিয়া পাখি। সন্ধান পেতে ঢাকার গুলশান এলাকার দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে একটি রঙিন পোস্টার। হারানো সেই পোষা টিয়া পাখিটির ছবিও রয়েছে পোস্টারে। আর পাখিটির সন্ধানদাতার জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় পুরস্কারের ঘোষণাও।

‘পাখি হারানো বিজ্ঞপ্তি’ শিরোনামের এই পোস্টারে উল্লেখ করা হয়, সন্ধানদাতাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হবে।

পোস্টারটিতে আরো লেখা রয়েছে, ‘কিউই (টিয়া) পাখিটি নিজের নাম বলতে পারে’।

পাখিটির মালিক ফাইজা ইব্রাহীমের সাথে কথা হয় বিবিসি প্রতিনিধির। গুলশান-১ এলাকার এই বাসিন্দা বলেন, পাখিটিকে ‘কিউই’ নামে ডাকেন তিনি।

ইব্রাহীম বলেন, পোষা পাখিটি ছাড়া থাকতো। বাড়ির সবার প্রিয় হওয়ার কাঁধে কাঁধে ঘুরে বেড়াত এটি। শুধু রাতের বেলা খাঁচায় অবস্থান করে সে। গত ৩ অক্টোবর সকাল ৯টার পর থেকে পাখিটি নিখোঁজ।

ইব্রাহীম একজন পশু-পাখিপ্রেমিক। তিনি বলেন, এই পাখিটা ছাড়াও তার কুকুর ও বিড়াল আছে।

সান কন্যুর প্রজাতির এই টিয়া ২০১৮ সালে কেনেন ফাইজা। সান কন্যুর টিয়া পাখির জন্ম দক্ষিণ আমেরিকায়। এটি মূলত একটি কেজ বার্ড বা খাঁচায় পোষা পাখি। এটি বাংলাদেশে আমদানি করার পাশাপাশি অনেকেই প্রজনন করে বাচ্চা বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।

ঢাকার একটি পোষা পাখির দোকান অ্যাংগ্রি বার্ডসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্ণবয়স্ক একজোড়া প্রজননক্ষম সান কন্যুরের দাম ৫০ হাজার টাকা। সেই হিসেবে একটির দাম ২৫ হাজার টাকা।

প্রজননক্ষম না হলে প্রতিটি সান কন্যুরের দাম ২০ হাজার টাকা। আর নবজাতকের দাম ১২ হাজার টাকার মতো।

তাহলে একটি পাখি খুঁজে দেয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করলেন কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ইব্রাহীম বলেন, ‘যারা পাখি পালেন তারা জানেন যে পাখি হারিয়ে গেলে সেটা খুঁজে পাওয়া কতটা কঠিন।’

তিনি জানান, তার প্রিয় ‘কিউই’ টিয়াটা এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো হারালো।

‘প্রথমবার হারানোর সময় আমি পোস্টার দিয়েছিলাম। বাসার পাশেই কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছিল। তারা পেয়েছিল। আমি তাদেরকে ১৪ হাজার টাকা দিয়েছি। দ্বিতীয়বারেও পোস্টার দিয়েছি। যারা পেয়েছিল তারা টাকা নিতে চায়নি। কিন্তু আমি উপহার দিয়েছি।’

ইব্রাহীম বলেন, ‘আমার কাছে টাকার চেয়ে বড় হলো পাখিটাকে পাওয়া। এজন্য আমি টাকার অংকটা বেশিই দিয়েছি। কারণ একটা মানুষ কষ্ট করে পাখি খুঁজে দেবে তার অবশ্যই পুরস্কার পাওয়া উচিৎ।’

যারা তার পাখিটা খুঁজে দিতে চেয়েছেন এমন অন্তত ৪০টার মতো ফোন কল পেয়েছেন বলে জানালেন ইব্রাহীম।

‘তারা বলছেন টাকাটা তাদের দরকার। পাখি খুঁজে দিলে আমি আসলেই টাকা দেব কিনা এটাও অনেকে জানতে চাচ্ছেন। আমি তাদেরকে নিশ্চয়তা দিয়েছি।’

তবে, তৃতীয়বারের মতো তার টিয়া পাখিটিকে খুঁজে পাবেন কিনা এ নিয়ে সন্দেহে রয়েছেন তিনি।

ইব্রাহীম বলেন, ‘আমি আসলে চিন্তায় আছি যে এই পাখিগুলো ওয়াইল্ডে (উন্মুক্ত পরিবেশে) বাঁচতে পারে না। তৃতীয়বারের মতো আমি সৌভাগ্যবান হবো কিনা জানি না।’

সম্পর্কিত পোস্ট