দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। এতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ৪ কিলোমিটার ও গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় ২ কিলোমিটার সড়কে যানবাহন আটকে রয়েছে। যানবাহনগুলোর মধ্যে শতাধিক যাত্রীবাহী বাস ও চার শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক রয়েছে। এসব পণ্যবাহী ট্রাক রাত থেকেই ফেরি পারের জন্য মহাসড়কে অপেক্ষা করছে।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে যানবাহনের সারি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারিজ পর্যন্ত চার কিলোমিটার এলাকা ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে শতাধিক যাত্রীবাহী বাস ও চার শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক রয়েছে।
এছাড়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে চাপ কমাতে ঘাট থেকে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার পেছনে গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ীর দিকে কল্যাণপুর বাজার পর্যন্ত আরও দুই কিলোমিটার এলাকায় ২ শতাধিক অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখা হয়েছে।
ঘাট সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগে ঘাট এলাকায় চাপ কমাতে ও ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ঈদের আগে তিন দিন ও পরের তিন দিন অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকার খবরে ঘাট এলাকায় ট্রাকের অতিরিক্ত চাপ বেড়েছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে ফেরিতে উঠার সংযোগ সড়ক কর্দমাক্ত হয়ে যাওয়ায় ফেরি লোড-আনলোডে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানবাহনের সারি দীর্ঘ হচ্ছে।
ট্রাকচালক মাসুম বিল্লাহ বলেন, চুয়াডাঙ্গা থেকে চাল নিয়ে ঢাকার কারওয়ান বাজার যাচ্ছি। আট ঘণ্টারও বেশি সময় হয়ে গেল ঘাট এলাকায় এসে আটকে আছি। ঘাটে অনেক ট্রাকের সারি রয়েছে। কখন যে ফেরির নাগাল পাব, বলতে পারছি না।
ঢাকাগামী রয়েল এক্সপ্রেসের যাত্রী তুহিন ইসলাম বলেন, অসুস্থ বাবাকে ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছি। দুপুর ১টায় ডাক্তারের সিরিয়াল দেওয়া আছে। কিন্তু ঘাট এলাকায় যানজটের কারণে তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় বাস দাঁড়িয়ে আছে। সময়মতো বাবাকে ডাক্তার দেখাতে পারব কি না বলতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন পর ঈদ। এখনও সড়কে যে পরিমাণ যানজট দেখছি, তাতে ঈদে কীভাবে মানুষ বাড়ি যাবে, সেই চিন্তা করছি। এখনই যদি কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে ঈদে ঘরেফেরা মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকবে না।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান জানান, ঈদের আগে ও পরে পণ্যবাহী ট্রাক বন্ধ থাকার খবরে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো একযোগে রাজধানীমুখী হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে ফেরিতে ওঠার সংযোগ সড়ক কর্দমাক্ত হওয়ায় ফেরি লোড-আনলোডে সময় বেশি লাগছে। তাছাড়া ঢাকা থেকেও অনেকে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পরিবার পরিজনকে আগেই পাঠিয়ে দিচ্ছেন। যে কারণে ঘাটের দুই প্রান্তেই কিছুটা যানবাহনের চাপ তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এই নৌরুটে ১৯টি ফেরি চলাচল করলেও ঈদ উপলক্ষে আরও দুটি ফেরি বহরে যুক্ত হবে বলেও জানান তিনি।