বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রবাস প্রজন্মের উৎসব

দুবাইয়ে ‘রূপসী বাংলার জন্মদিন’ উদযাপন

প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২২ | ১:২২ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২২ | ১:৫২ পূর্বাহ্ণ
দুবাইয়ে ‘রূপসী বাংলার জন্মদিন’ উদযাপন

‘স্বাধীনতা তুমি বাগানের ঘর, কোকিলের গান/ বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা/ যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা।’ কবি শামসুর রাহমান লেখা স্বাধীনতা তুমি কবিতার এই পংক্তিগুলোর উপর ভর করে রূপসী বাংলার জন্মদিন পালন করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই প্রবাসীরা। লাল-সবুজের সাজ আর রঙিন পোষাকে প্রবাসীদের উপস্থিতিতে শারজাহ ন্যাশনাল পার্ক রূপান্তর হয় বাংলাদেশের খন্ডচিত্রে। শনিবার বিকালে এই উৎসবকে আরো বেশি প্রাণবন্ত করে তুলে বিদেশে বেড়ে ওঠা প্রবাস প্রজন্মের শিশু-কিশোররা।

‘রূপসী বাংলার জন্মদিন’ নামে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের ব্যতিক্রমী এই আয়োজন করেন দুবাই প্রবাসী নাহিদা পারভীন মুন্নী ও কানিজ ফাতিমা পপি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দুবাইয়ে নিযুক্ত কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেনের সহধর্মিণী মিসেস আবিদা হোসেন। এই আয়োজনে বিশেষ সহযোগিতা করেন মোহাম্মদ নওশের আলী। উৎসবে মাহবুব আলম মানিক, আবদুল আলীম, নেসার খান, ক্যাপ্টেন শরীফ, ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

দেশের গান, কবিতা আর আলাপচারিতায় মুখরিত ছিল বিকাল থেকে সন্ধ্যা। পুরো আয়োজনে ভিন্ন রঙ ছড়ায় শিশুরা। তাদের প্রতিযোগিতাই ছিল চিৎকার করা। শুধু বাক্য বেঁধে দেয়া হয়েছিল- ‘আই লাভ বাংলাদেশ’। তিন অক্ষরে এই বাক্য উচ্চরণের মাধ্যমে কোমলচিত্তে কৌশলে দেশের প্রতি মায়া গেঁথে দেওয়া হয়। এরচেয়েও ব্যতিক্রম ছিল প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলাদের কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’ চিৎকার। অবশ্য ‘জয় বাংলা’ চিৎকার করে বলতে পারাও ছিল প্রতিযোগিতার অংশ। সাউন্ড মিটারে সর্বোচ্চ রেকর্ডধারীরা এতে জয়ী হন। আর পুরুষদের জন্য নির্ধারিত ছিল বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষন। তারাও বজ্রকণ্ঠে এইদিন বলার সুযোগ পেয়েছেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।

এসময় উপস্থিত প্রায় সকলের হাতে ‘জয় বাংলা’ লেখা ফেস্টুন ও ব্যানার শোভা পায়। আয়োজনের একফাঁকে কমিউনিটির প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী অনিন্দিতা সুমিকে আবেগঘন বিদায় দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মিসেস আবিদা হোসেন বলেন, এই দিনটি আমাদের মহান স্বাধীনতার দিন। জাতীয় দিবস। ত্রিশ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির জীবনে অনন্য সাধারণ একটি দিন। আমাদের হাজারো বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। সবাই একসঙ্গে প্রবাসে লাল সবুজে রাঙানো এই দিনটি উদযাপন করতে পেরে গর্বিত। এই গৌরবদীপ্ত দিনটিতে রাঙিয়ে তুলতে দুবাইয়ে যারা এমন একটি আয়োজন করেছেন তারা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখেন।

মোহাম্মদ নওশের আলী বলেন, প্রিয় বাংলাদেশের জন্মদিন হয়ত এমনই আনন্দ উৎসবে পালন করা উচিত। যেমন ভেবেছিলাম তার চেয়েও রঙিন হয়েছে প্রবাসের এই আঙিনা। সবচাইতে ভালো লেগেছে সবার আনন্দমুখ ও অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ। সবাই আনন্দ কোলাহলে আঙিনা সরব রেখেছেন, আনন্দ করেছেন। অপূর্ব আনন্দে কেটেছে সময়, পালিত হয়েছে প্রিয় রূপসী বাংলার জন্মদিন। এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ত্ব উপস্থিত সকলের।

আয়োজক নাহিদা পারভীন মুন্নী জানান, এই আয়োজনের সহ-আয়োজক ছিলেন পপি। এ ছাড়াও পারভেজ, শফিক, মিজান, কাজী ইসমাইল, সোয়েব, রুমী, মাহমুদা, শবনম, লোপা, শিপু, লিপি, পুতুল, মনি, মুক্তাসহ উপস্থিত সবাই এই আয়োজন সফল করতে সহযোগিতা করেছেন। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে তোলার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট