সংযুক্ত আরব আমিরাতের শহর দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক ট্রেড সেন্টারে কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের জন্য জনপ্রিয় ও বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম মেলা গালফ ফুড ফেয়ারে সাড়া পাচ্ছে বাংলাদেশ। পাঁচদিন ব্যাপী এ মেলার মূল আকর্ষণ ছিল বিশ্বের ১৮৫টি দেশের বাহারি সব কৃষি পণ্যের প্রদর্শনী। করোনার প্রকোপ কমে আসায় বেশ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল বিদেশী ক্রেতাদের। ফলে এ বছর ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি আদেশ পেতে পারে বাংলাদেশ। যা বাংলাদেশি টাকায় ৬৮০ কোটি টাকার বেশি।
বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও মেলায় প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে ৪৮টি বাংলাদেশি কোম্পানি। এরমধ্যে রয়েছে – মেঘনা গ্রুপ, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, অভিজাত ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, এজি এগ্রো ফুড, আহমেদ ফুড, আলিন ফুড, আমিন স্কয়ার, আরিফ এগ্রো, বনফুল, বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, বম্বে সুইটস, সিটি গ্রুপ, ডেনিস ফুড, ইউরেশিয়া ফুড, গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস, হক গ্রুপ, সজিব গ্রুপ, হিফস এগ্রো ফুড, কাজী ফার্মস, মাই ফুডস, প্যাসিফিক কনজুমার, রংপুর ডেইরি ফুড, সিয়াম এগ্রো ফুড, স্টার লাইন, ওয়েল ফুড এবং জিসান ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড।
গত বছরের তুলনায় এ বছর অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে ২০২১ গালফ ফুড-এ ছিল ৪২টি স্টল সেখানে ২০২২ এ ৪৮টি স্টল স্থান পেয়েছে। স্টলগুলোতে বাংলাদেশি পণ্যের প্রদর্শনীতে কাজ করছেন প্রায় দেড় শতাধিক প্রতিনিধি।
মেলায় অংশ নেয়া প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হেড অব ইন্টারন্যাশনাল আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘বিগত ২০ বছর যাবৎ আমাদের কোম্পানি এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করে আসছে। সর্বশেষ ২০২০ সালের আয়োজনও বেশ জমকালো ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে গত বছর তেমন সাড়া মেলেনি। এবার তুলনামূলক ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। দর্শনার্থীর চেয়ে ক্রেতার আনাগোনা বেশি থাকায় অনেক অর্ডার পাওয়া গেছে। আশা করছি, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের ব্যবসা আরও সমাদৃত হবে।’
অভিজাত ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজ রহমান বলেন, ‘আমাদের ড্রাই ফুড, সফট ড্রিংস, চকলেটসহ বেশ কিছু পণ্যের প্রতি আফ্রিকা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বায়ারদের আগ্রহ দেখতে পেয়েছি। তাদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। এই বছর আমরা আশানুরূপ অর্ডার পাবো।’
এ প্রসঙ্গে ‘গালফ ফুড’ ফেয়ারের বাংলাদেশি প্যাভিলিয়ন ডিরেক্টর আবু মোখলেছ আলমগীর হোসেন বলেন, এই মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ তাদের বর্তমান বাজার সুসংহত করার পাশাপাশি নতুন বাজার অন্বেষণের প্রচেষ্টা গ্রহণ করে থাকে। প্রতি বছর রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ব্যবস্থাপনায় প্রায় ৫০টি কোম্পানি নিয়মিত ভাবে এই আন্তর্জাতিক ট্রেড ফেয়ারে অংশগ্রহণ করে। প্রতি বছরই রপ্তানি আদেশ প্রাপ্তির সফলতার মুকুটে নতুন নতুন পালক যুক্ত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে এ মেলার গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এ মেলার উদ্বোধন করেন দুবাই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের চেয়ারম্যান শেখ আহমেদ বিন সাদ আল মাখতুম। পাঁচদিন ব্যাপী এ মেলা শেষ হবে বৃহস্পতিবার।