শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১

দুই বছর পর সারাদেশে উৎসবমূখর ঈদ

প্রকাশ: ৫ মে ২০২২ | ১২:৫৩ অপরাহ্ণ আপডেট: ৫ মে ২০২২ | ১২:৫৩ অপরাহ্ণ
দুই বছর পর সারাদেশে উৎসবমূখর ঈদ

সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। বিধিনিষেধহীন এবারের ঈদে তাই জনমনে ছিলো বাঁধভাঙা আনন্দ। বিগত দুটি ঈদে ছিলো বৈশ্বিক মাহামারী কোভিড-১৯ এর কঠোর বিধিনিষেধ। ‘পাশাপাশি দাঁড়ানো যাবে না, হাত মেলানো যাবে না, কোলাকুলি করা যাবে না’। গত দুই বছর এ ধরনের ডজন খানেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেই কেটেছে দেশবাসীর ঈদ। জামাত হয়নি খোলা জায়গায়, সমাগম করতে দেয়া হয়নি। অনেকটাই ভাটা পড়েছিল ঈদের আনন্দে। দেশবাসী মরিয়া হয়ে উঠেছিল একটা স্বাভাবিক ঈদ উদযাপনের জন্য। সাদামাটা ভাব কাটিয়ে এবারের ঈদে তাই দেখা যায় প্রাণের উচ্ছ্বাস।

ঈদের দিন সকালে পরপর ৫ টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ঈদগাহ বাইতুল মোকাররম ঈদগাহে। সবক’টি জামাতে ছিলো মানুষের ঢল। শিশু কিশোরদের মধ্যে ছিলো উৎসবের আমেজ। রঙ-বেরঙ এর জামা কাপড়, বাহারী পাঞ্জাবীতে ঢাকা সহ সারাদেশের ঈদগাহে শিশু-কিশোরদের ছোটাছুটি ছিলো চোখে পড়ার মতো।

চট্টগ্রাম নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ মাঠে ঈদের নামাজের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব জামাতেও মুসল্লিদের ঢল নামে।

ঈদ আনন্দের অংশ হিসেবে মানুষ ভিড় জমাতের থাকে দেশের দর্শনীয় স্থানসমূহে। সারাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলো হয়ে উঠে লোকে লোকারণ্যা। রাজধানী ঢাকার হাতির ঝিল যেন পরিণত হয়ে রূপকথার আনন্দনগরীতে। নতুন পোশাকের রঙে হাতিরঝিল রূপ নিয়েছে এক টুকরো রঙিন ক্যানভাসে। পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে এসেছেন অসংখ্য মানুষ। বড়দের চেয়ে ছোটদের আনন্দ ও উচ্ছ্বাস বেশি দেখা গেছে। শিশু-কিশোরদের দৌড়াদৌড়ি ও হুড়োহুড়িতে গোটা হাতিরঝিল হয়ে উঠে মুখরিত।

দর্শনার্থীদের আগমন উপলক্ষে হাতিরঝিলের ফুটপাতে ফুসকা-চটপটিসহ নানা রকম মুখরোচক খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ঘোরাঘুরি শেষে এসব দোকানে বসে পছন্দমতো খাবার খাচ্ছেন অনেকে।

এদিকে ধারণক্ষমতার তিনগুণ দর্শনার্থী ভিড় করতে থাকে জাতীয় চিড়িয়াখানায়। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরবন্দি মানুষের ঢল নেমেছে সেখানে। জাতীয় চিড়িয়াখানার লোক ধারণক্ষমতা ৫০ হাজার হলেও সেখানে লোক প্রবেশ করে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ।

ঈদের দিন ও ঈদের দ্বিতীয় দিনে চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, কনকর্ড ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, স্বাধীনতা পার্ক, শিশু পার্ক, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে সুন্দর সময় উপভোগ করছেন তারা। বুধবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই নানা শ্রেণি বয়সী মানুষের ভিড় ছিল বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে।

দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে ঈদের জামাতের সময় বৃষ্টিপাত ছাড়া সারাদেশে ঘটেনি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে ভারী বর্ষণের কারণে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে ঈদের আনন্দ মাটি হয়েছে।

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায়ও ঈদের জামাতের পর শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। তবে মানুষকে হতাশ না করে বিকেলের দিকে খানিকটা বিরতি দেয় বৃষ্টিপাত। এরই মধ্যে মানুষ ভিড় জমাতের শুরু করে আরশিনগর পার্ক মহামায়াতে । অল্প কিছুক্ষণেই লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে মিরসরাইয়ের পর্যটনকেন্দ্রগুলো।

সম্পর্কিত পোস্ট