রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১

দশ জনের দলকেও হারাতে পারল না বার্সেলোনা

প্রকাশ: ৮ এপ্রিল ২০২২ | ৫:০২ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৮ এপ্রিল ২০২২ | ৫:০২ পূর্বাহ্ণ
দশ জনের দলকেও হারাতে পারল না বার্সেলোনা

শেষ কিছু দিনে মাঠে নামলে জয়টা যেন অবধারিতই হয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনার। তবে জার্মান দল আইনট্র্যাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের মাঠে সে ফর্মটা টেনে আনতে পারল না কোচ জাভি হার্নান্দেজের শিষ্যরা। পিছিয়ে পড়ে ১-১ গোলে সমতা ফিরিয়েছে বটে, কিন্তু পরে দশজনের দলে পরিণত হওয়া জার্মান প্রতিপক্ষকে হারাতে পারেনি কাতালান দলটি।

জার্মান বহু দলের বিপক্ষেই খেলার অভিজ্ঞতা ছিল বার্সার। তবে আইনট্র্যাখটের বিপক্ষে নিজেদের ইতিহাসে কখনোই খেলা হয়নি লা ব্লাউগ্রানাদের। শুধু জার্মান দলের বিপক্ষে ইতিহাস যদি ধর্তব্যে আসে, শেষ কিছু দিনের স্মৃতিটা বার্সা তাহলে ভুলেই যেতে চাইবে। জার্মান দলের বিপক্ষে নিজেদের শেষ তিন ম্যাচে দলটি হজম করেছিল ১৪ গোল। তিনটি ম্যাচই অবশ্য খেলেছিল বায়ার্নের বিপক্ষে। ২০১৯-২০ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে সেই ৮-২ গোলের হারের পর চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচেই হেরেছিল ৩-০ ব্যবধানে।

ধারে ভারে এই আইনট্র্যাখট সেই বায়ার্নের ধারে কাছেও নেই, বার্সেলোনাও তো আর সেই নড়বড়ে বার্সেলোনা নেই! ডয়েশ ব্যাংক পার্কে তাই জয়ের আশা নিয়েই পা রেখেছিল জাভির দল। শুরুটাও করেছিল বেশ ভালো। তৃতীয় মিনিটে ফেররান তরেসের দূরপাল্লার শট স্বাগতিক গোলরক্ষক কেভিন ট্র্যাপ ফিরিয়েছিলেন দারুণ দক্ষতায়।

স্বাগতিকরাও অবশ্য জবাবটা মন্দ দিচ্ছিল না। ষষ্ঠ মিনিটে প্রতি আক্রমণে উঠে এসে বড় একটা সুযোগ নষ্ট করে বসে আইনট্র্যাখট। ১৮ মিনিটে বার্সার সামনে গোলের সুযোগ এসেছিল একটা। তবে পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াংয়ের শটটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

শুরুর ২০ মিনিট দারুণ ফুটবল খেলা বার্সার খেলায় ছেদ পড়ে ২২তম মিনিটে। অ্যাডাক্টরের চোট নিয়ে জেরার্ড পিকে ছাড়েন মাঠ, একটু আগেভাগেই বদলি খেলোয়াড় হিসেবে ক্লেমেন্ত লংলেকে মাঠে আনতে হয় কোচ জাভিকে।

এরপর থেকে রক্ষণে বেশ কিছুক্ষণ নড়বড়ে মুহূর্ত গিয়েছে দলটির। ৩৭ মিনিটে তেমনই এক মুহূর্তে পেনাল্টিই দিয়ে বসেছিল বার্সা। বক্সের ভেতর ফিলিপ কস্টিচের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে জড়ান অধিনায়ক সার্জিও বুসকেটস, যা সার্বিয়ান রেফারি স্রদইয়ান ইয়োভানোভিচের কাছে পেনাল্টিই মনে হয়েছিল। তবে ভিএআর দেখে এসে রেফারি তার সিদ্ধান্ত বদলান, তাতে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে বার্সেলোনা। বিরতির আগে আর গোল পায়নি কোনো দলই।

তবে দৃশ্যটা বদলে যায় বিরতির পরেই। ৪৮ মিনিটে অ্যানসগার নফের দারুণ এক গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ডান পাশে পাওয়া কর্নার পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেনি বার্সা। বক্সের বাইরে থেকে হাফ ভলি করে বসেন নফ। সেটাই ডান পাশে উপরের কোণা দিয়ে মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেনের নাগালের বাইরে দিয়ে গিয়ে আছড়ে পড়ে জালে।

এক গোলে এগিয়ে গিয়ে ফ্রাঙ্কফুর্ট উজ্জীবিত হয়ে ওঠে আরও। সমর্থকরাও পেছন থেকে ফ্লেয়ার জ্বালিয়ে, কোলাহল বাড়িয়ে দলের মনোবল বাড়াচ্ছিলেন সমানতালে। বার্সেলোনাও যেন কিছুটা স্নায়ুচাপেই ভোগা শুরু করেছিল। পরের মিনিটেই একটা গোলের সুযোগ দিয়ে বসে, যদিও স্বাগতিক আক্রমণভাগের ব্যর্থতায় তা আর গোলে রূপ পায়নি।

গোলের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে থাকা বার্সা এরপর দ্বারস্থ হয় ম্যাচটা বেঞ্চে থেকে শুরু করা উসমান দেম্বেলে ও ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের। দুজন মাঠে আসার ৫ মিনিটের মধ্যেই গোলের দেখা পেয়ে যায় বার্সা।

৬৭ মিনিটে বার্সার আক্রমণের শুরু হয় দেম্বেলেকে দিয়ে। এরপর বক্সে ফ্রেঙ্কির সঙ্গে দুবার বল দেওয়া নেওয়া করে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে আইনট্র্যাখটের জালে বল জড়ান তরেস। যার ফলে শেষ ৫ ম্যাচে তার গোলে অবদানের সংখ্যা দাঁড়ায় ছয়ে।

ম্যাচের ৭৮ মিনিটে তুতা দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। তাতে স্বাগতিকরা পরিণত হয় ১০ জনের দলে। বার্সেলোনা এরপর জয়সূচক গোলের জন্য লড়েছে শেষ পর্যন্ত। তবে লাভ হয়নি, গোল আর করা হয়নি। ফলে ১-১ ড্রই নিয়তি হয় জাভির দলের।

এই ড্রয়ের ফলে আগামী লেগে জয় ছাড়া আর কোনো উপায়ই খোলা রইলো না ফেররান তরেসদের সামনে। তবে দলটিকে অনুপ্রেরণা যোগাতে পারে একটা তথ্য। শেষ দুই ইউরোপা লিগের ম্যাচে শুরুর লেগ ড্র করেও পরের লেগ জিতে পরের পর্বে পা রেখেছে দলটি। তার পুনরাবৃত্তি যে আগামী সপ্তাহের ম্যাচে করতে চাইবে জাভির দল, তা বলাই বাহুল্য।

সংলাপ-০৮/০৪/০০১/আ/আ

সম্পর্কিত পোস্ট