
টানা তিন দিনের সরকারি ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে কক্সবাজারে। আর এই সুযোগে বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টে খাবারের গলাকাটা দাম নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রুম ভাড়াও।
গাড়ি ভাড়া থেকে শুরু করে সবকিছুর জন্য পর্যটকদের গুনতে হচ্ছে দুই-তিন গুণ বেশি টাকা। ১ হাজার টাকা রুমের ভাড়া বেড়ে ৫ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে বলে অভিযোগ পর্যটকদের। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে তিন দিনের টানা ছুটিতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে অবস্থান করছেন পাঁচ লাখেরও বেশি পর্যটক। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হোটেল-মোটেলগুলো অস্বাভাবিক হারে ভাড়া আদায় করছে।
সাধারণ একটি রেস্টুরেন্টে শুধু ডাল-ভাতের দাম রাখা হচ্ছে ৪০০ টাকা। এক প্লেট ভাত ও আলু ভর্তার দাম রাখা হচ্ছে ৩০০ টাকা। পাশাপাশি শহরের অটোবাইক ও রিকশা চালকরাও দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছেন। এতে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা। তবে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন।
আবুল কাশেম ও শারমিন আক্তার নারায়নগঞ্জ থেকে কক্সবাজার ভ্রমণে গেছেন বৃহস্পতিবার। গিয়ে খাবারের সমস্যায় পড়েছেন তারা। কাশেম ও শারমিন জানান, শুক্রবার দুপুরে কলাতলীর রেস্টুরেন্টে এক প্লেট ভাত আর আলু ভর্তার দাম রেখেছে ৩০০ টাকা। দুই পিস কোরাল মাছের দাম রেখেছে ৭০০ টাকা।
বেড়াতে গিয়ে বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত সোহেল আরমান বলেন, শুধু গলাকাটা বললে কম হবে, রীতিমতো আশ্চর্য হয়েছি। কয়লা রেস্টুরেন্ট সাধারণ মানের। অথচ এক বাটি মুগ ডালের দাম রাখা হয়েছে সাড়ে ৩০০ টাকা। এক প্লেট ভাতের দাম ৫০ টাকা। শুধু ডাল-ভাতই নয়, সব কিছুর দাম গলাকাটা।
এদিকে হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কামেম সিকদার। তিনি বলেন, ভরা মৌসুমে হোটেলের রুম ভাড়া একটু বেশিই থাকে। তবে যেসব হোটেল মালিক মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে আমরা অভিযোগ দেবো। পাশাপাশি খাবারের রেস্টুরেন্টগুলো অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে। এতে পর্যটকদের বাড়তি টাকা গুনতে হয়। আমরা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে জানাবো।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. আবু সুফিয়ান গণমাধ্যমকে বলেন, পর্যটকদের হয়রানি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। যেখান থেকেই অভিযোগ আসবে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়ে ব্যবস্থা নেবো। আশা করি, পর্যটকরা নিরাপদে সৈকত ও অন্যান্য পর্যটন স্পট উপভোগ করতে পারবেন। এ জন্য কাজ করছে আমাদের একাধিক টিম।