গ্রামবাসীর চলাচলের রাস্তায় বিনা নোটিশে পানছড়ি ইসলামি সিনিয়র মাদরাসা কর্তৃপক্ষ দেয়াল তুললে উপজেরা নির্বাহী কর্মকর্তা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে গ্রামবাসীর সাথে আলোচনা করে সমাধান মৌখিক নির্দেশ দেন । কিন্তু নির্বাহী কর্মকর্তার আদেশ কর্ণপাত না করে উল্টো গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ৷ যা এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোবাইয়া আফরোজ জানান, আমি তো মাদাসা কর্তৃপক্ষকে যারা এ রাস্তা ব্যবহার করে আসছে তাদের সাথে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাকে জানাতে বলছি। তার আগ পর্যন্ত রাস্তার কাজ বন্ধ রাখতে বলেছিলাম। তারা আমাকে কোন সিদ্ধান্ত জানায় নি।তারা আমাকে
মামলার বিষয়টি জানায় নি।মামলার বিষয় খোজ খবর নিচ্ছি। দেয়ারের জন্য যে বরাদ্দ সেটা আমরা বাদ করে দিব বা অন্য কাজ করিয়ে নিব।
জানা যায়, পানছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসা সৃষ্টির পূর্ব থেকেই মাদাসার সামনের রাস্তাটি গ্রামবাসি নির্বিঘ্নে ব্যবহার করে আসছে। গত শনিবার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিনা নোটিশর রাস্তাটি দেয়াল তুলে বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে গ্রামের সাধারণ মানুষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে মাদরাসার অধ্যক্ষকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও কাজ চালিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ। এতে গ্রামবাসীর সাথে তর্কে জড়ায় কর্তৃপক্ষ।এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেয়ালের কাজ বন্ধ রেখে গ্রামবাসীর সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিতে মোখিক আদেশ দেন।মাদরাসা কর্তপক্ষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশ অনুযায়ী গ্রামবাসির সাথে আলোচনা না করে উল্টো গ্রামীর বিরুদ্ধে মামলা করে দেয়। যা এলাকা জুড়ে ক্ষোভ ও সমালোচনার জন্মদিয়েছে।
এ বিষয়ে গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ রাবেয়া খাতুন(৬৭) বলেন, আমার নামে মাদরাসার হুজুররা মামলা করেছে।আমি এই বয়সে জেল খাটতে রাজি কিন্তু এই অন্যায় মেনে নিব না। এই রাস্তাটি অন্তত আদিকাল থেকে আমার স্বামী, শ্বশুর, সন্তানরা ব্যবহার করেছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে তারা ব্যবহার করে আমাদের প্রতি জুলুম করতেছে।তাদের উপর আল্লাহর গজব পড়বে।
গ্রামে বসবাসকারী ও মাদরাসার শিক্ষক নুরুল আমিন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এই মাদরাসার শিক্ষকতা করছি। মাদ্রাসায় জয়েন করার পর থেকে দেখছি মানুষ এ রাস্তাটা ব্যবহার করছে।সম্প্রতি রাস্তাটি বিনা নোটিশে বন্ধ করে। ইউএনও গত সপ্তাহে কাজ বন্ধ রাখতে বলেন।গ্রামবাসীর সাথে আলোচনা করতে বলেন।কিন্তু আমাদের সাথে না বসে গতকাল তারা আমিসহ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে।যা অনাকাঙ্ক্ষিত।
আব্দুল কাদের বলেন, তারা আমি ও আমার বৌ সহ আমার ৮০ বছরের বৃদ্ধ মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে। এটা ধর্মীয় শিক্ষকরা কেমনে করতে পারলো! আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী এতোদিন আইনগত ব্যবস্থা নেই নি। এখন নেব।
মাদ্রাসার সাবেক সুপার মারা যাওয়ার পর অধ্যক্ষ নিয়োগ না দিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত হয়ে তিনি বিধি বহির্ভূতভাবে পদটি ধরে রেখেছেন।লেখাপড়ায় অবনতি, এবতেদায়ী শাখায় শিক্ষার্থী সংকট, বছরের পর বছর ধরে অডিট না করা, নিজেদের পছন্দের লোক দিয়ে পকেট কমিটি গঠন, রাতের আধারে প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপ চুরি হলেও থানায় জিডি না করা, মাদ্রাসার পুকুর ও নারিকেল গাছ লিজ না দিয়ে নিজেদের মাঝে ভাগাভাগি করা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে অন্তকোন্দলের দ্বন্দ্ব অন্য দিকে মোড় ঘুরাতে বর্তমান অধ্যক্ষ রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়ে এলাকাবাসীকে প্রতিপক্ষ হিসাবে দাড় করাচ্ছে।
এ বিষয় মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ মাওলানা আবুল কাশেম বলেন, রাস্তা বন্ধ করা দেয়াটা আমরা সিদ্ধান্ত না, কমিটির সিদ্ধান্ত। এদিকে গ্রামবাসি চলাচল করা আমার জন্য এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য সমস্যা। ইউএনও মহোদয় রাস্তার কাজ বন্ধ রেখে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছেন। তা না করে মামলা করেছেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাক্ষ বলেন, আমাকে অনেকে ফোন দিছে। তাই মামলা করেছি।মামলা হয়েছে সমস্যা নাই, সমাধানও হবে।