চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী ও হালিশহর) আসনের উপ-নির্বাচনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল রোববার (৩০ জুলাই)। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। ১৫৬টি কেন্দ্রের ১ হাজার ২৫১টি বুথে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি বুথে একটি করে সিসি ক্যামরা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্র আলাদা সিসি ক্যামরার নজরদারীতে থাকবে। নজরদারি নিশ্চিতে ইতোমধ্যে এক হাজার ৪০৭টি সিসি ক্যামরা স্থাপন করা হয়েছে।
শনিবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ১৫৬টি ভোট কেন্দ্রের ১২৫১ বুথে সিসি ক্যামরা স্থাপন করা হয়েছে। কেন্দ্রে ইভিএমসহ প্রয়োজনী সব কিছু চলে যাচ্ছে। সব ঠিকঠাক আছে কিনা তদারকি করে ত্রুটি থাকলে তা রাতেই সারিয়ে নেয়া হয়ে।
ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট প্রদান নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছেন বলেও জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান। তিনি বলেন, ৬ প্লাটুন বিজিবি এবং ৬ প্লাটুন র্যাব মোতায়েন থাকবে। সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে ১৫ জন পুলিশ ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ১৬ জন পুলিশ ও আনসার দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ এবং এপিবিএনের সমন্বয়ে ৮ ওয়ার্ডে ৮টি মোবাইল ফোর্স থাকবে।
নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সাথে দায়িত্ব পালনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আইনানুগ নির্দেশনা প্রদানের জন্য ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপ নির্বাচনে ১৬৪ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১৩১৪ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ২৬২৮ জন পোলিং অফিসার ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচনী কার্যালয় থেকে আগেই জানানো হয়েছে, ভোটগ্রহণের জন্য ৪ হাজার ১০৬ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এবং ২ হাজার ১১০টি ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১৪০৭টি সিসি ক্যামরা স্থাপন করা হয়েছে।
শনিবার দুপুর থেকে পুলিশি নিরাপত্তায় কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসারদের তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে ইভিএমসহ নির্বাচনী সামগ্রী।
চট্টগ্রাম-১০ আসনটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৮, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এখানে ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এদের মধ্যে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯২৯ জন পুরুষ এবং ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৮০ জন নারী ভোটার।
সরকার দলীয় সাংসদ ডা. আফছারুল আমিনের মৃত্যুতে এই আসনটি শূন্য হয়। উপ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. সামসুল আলম (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রশীদ মিয়া (ছড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরমান আলী (বেলুন) ও মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া (রকেট)।
উপ নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার লক্ষ্যে ২৮ জুলাই রাত ১২টা থেকে ৩১ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চলছে। শনিবার (২৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টা থেকে ৩০ জুলাই (রোববার) দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত ট্রাক, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, জিপ, পিক আপ, কার ও ইজিবাইক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
তবে রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী-তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য হবে। নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা–কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং কতিপয় জরুরি কাজ যেমন– অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য উল্লিখিত যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে ওই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
এছাড়া জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।