গ্রিসে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। গত তিন মাসে নানাভাবে গ্রিসে মারা গেছেন ১৮ জন প্রবাসী বাংলাদেশি। এদের অধিকাংশের মৃত্যুর প্রধান কারণ হৃদরোগ।
গ্রিস দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, গ্রিসে ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ এর জুন পর্যন্ত মোট ১০৯ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৪৫ জন এবং ২০২১-২০২২ অর্থবছরের সর্বশেষ তিন মাসেই ১৮ জন প্রবাসী মারা গেছেন। এদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী এক জনের মৃতদেহ গ্রিসেই দাফন করা হয়েছে। আরও ৪ জনের মৃতদেহ দেশে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে। মৃতদেহ দেশে পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসের তত্বাবধানে সার্বিক সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস।
বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, মানসিবভাবে বিপর্যস্থ হওয়ায় বেশিরভাগই মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। এদের কেউ কেউ জমি বিক্রি করে, কেউ ঋণ নিয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে গ্রিসে আসা প্রবাসী। বৈশ্বিক করোনা মহামারির দরুন সৃজিত মন্দা পরিস্থিতিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যায় করে গ্রিসে আসার পর কর্মহীন হয়ে পড়া, ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় মানসিক চাপে ভুগেছেন। বেশিরভাগ প্রবাসীই মারা গেছেন হৃদরোগে। এদের অনেকের বয়সই ৩০ থেকে ৪০ বছর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা ও ধারদেনা করে বিদেশ যাওয়ায় টাকা উপার্জনে মানসিক চাপে ভোগেন তারা। অনেকেই কড়া সুদে বা ঋণ করে পরিবার, ব্যক্তি বা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশ যান। প্রবাসে বসে এই টাকা পরিশোধের চাপে থাকেন তারা।
প্রবাসে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক বলছে, নারীদের ক্ষেত্রে আত্মহত্যায় মৃত্যুর হার বেশি। আর পুরুষদের হৃদরোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। অল্প বয়সীদের হৃদরোগে মৃত্যুর বিষয়টি অধিকরত ভাবনার।