![খাবারের টেন্ডার পেতে কেইপিজেডের শিল্প কারখানার কর্মকর্তাকে হুমকি বিএনপি নেতার](https://somoyersonglap.ae/wp-content/uploads/2024/10/7ae5fc60-76e2-4e7b-a438-3e51e8634837.jpeg)
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত কোরিয়ান কেইপিজেডের আমেরিকান এন্ড ইফার্ড বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি কারখানায় খাবারের টেন্ডার পেতে ওই কারখানার ডিজিএমকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযোগের বিষয়টি বৃহস্পতিবার রটাতে নিশ্চিত করেন কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন।
গত সোমবার কর্ণফুলী থানায় আমেরিকান এন্ড ইফার্ড বাংলাদেশ লিমিটেডের (মানব সম্পদ বিভাগ) ডিজিএম শেগুফতা গনি লিখিত অভিযোগটি করেন। অভিযোগে ইলিয়াস কাঞ্চন ও মো. কাইয়ুম খানের নাম উল্লেখসহ আরও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত অভিযুক্ত করা হয়।
বারশত ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইলিয়াস কাঞ্চন আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ ও কেইপিজেডের কারখানা সূত্র জানা যায়, অভিযুক্তরা ২ মাস পূর্বে ওই কোম্পানিতে খাবারের টেন্ডার পাওয়ার জন্য ডিজিএমকে প্রস্তাব দেন। তখন তাদেরকে কোম্পানি পলিসি অনুযায়ী বিবেচনা করে হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু অভিযুক্তরা মোবাইলে প্রতি সপ্তাহে ফোন করে খবর জানতে চাইতো। গত ২০ অক্টোবর তারা বাদীর মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে জানান, ১ নভেম্বর হইতে খাবারের টেন্ডারের কাজ না দিলে নানা রকমের ক্ষতি করা হবে। গত সোমবার বিকাল ৪ টার দিকে বিবাদীদ্বয়সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন একটি মাইক্রোবাসে করে বিনা অনুমতিতে ফ্যাক্টরীর ভিতরে প্রবেশ করে ডিজিএমকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেন এবং যাওয়ার সময় ফ্যাক্টরীতে কাজে না যাওয়ার জন্য বাদীকে হুমকি দিয়ে যায়। এসময় তাদেরকে টেন্ডার না দিলে ফ্যাক্টরী বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দেয়।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, এবিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে দল থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে ৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে আওয়ামী লীগ আমলে বিভিন্ন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকারী নেতাকর্মীরাও। ফলে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা। ঘটছে হামলা, একে অপরের দোষারোপ ও শক্তি প্রদর্শন। এতে আতঙ্কিত বিভিন্ন কারখানার মালিক, ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। পাশাপাশি ক্ষুব্ধ বিএনপির দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
ঘটনার পর দাপট দেখিয়ে ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় ‘শোডাউন (মহড়া) কৌশল’ নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুধু এ কেইপিজেড নয়, সিইউএফএল, কাফকো, কর্ণফুলী শিপইয়ার্ড ও ইউনাইটেড গ্রুপের বিদ্যুৎ প্রকল্পে একই কায়দায় ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের মহড়ার ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় শতাধিক কারখানা আছে। এ সকল কারখানার ওয়েস্টেজ (ঝুট), কেন্টিনসহ বিভিন্ন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের জন্য এলাকাভিত্তিক দলীয় প্রভাব খাটানোর চেষ্টা চলমান রয়েছে। ফলে গত কিছুদিনে ঘটেছে অঘটন, সামনে বড় বিশৃঙ্খলা হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।