কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর এক সমর্থককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।।
সোমবার রাত ৮টার দিকে ইউনিয়নের দশবাহা গ্রামে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের পাশ থেকে ফরহাদ হোসেন নামের ১৯ বছর বয়সী ওই তরুণকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ফেনী সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফরহাদ ওই গ্রামের কবির আহমেদের ছেলে। রোববার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সৈয়দ আহমেদ ভুঁইয়া খোকনের পক্ষে ছিলেন। নির্বাচনে খোকনকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তফা কামাল।
খোকনের অভিযোগ, নৌকা প্রতীকের টি-শার্ট গায়ে দেওয়ায় ফরহাদ হোসেনকে ‘কুপিয়ে হত্যা করেছে’ প্রতিপক্ষের লোকেরা’। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোস্তফা কামাল।
আর পুলিশ বলছে, ওই তরুণ ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন, নাকি কেউ কুপিয়ে হত্যা করেছে সেটা তদন্তের বিষয়।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা জানান, ফরহাদ ভোটের দিন নৌকার প্রতীক সম্বলিত টি-শার্ট গায়ে দিয়েছিলেন। এ নিয়ে আনারস প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকরা ফরহাদসহ কয়েকজনকে ‘দেখে নেওয়ার হুমকি’ দেন।
নৌকার প্রার্থী সৈয়দ আহমেদ ভুঁইয়া খোকন বলেন, “মোস্তফা কামালের লোকজন ফরহাদকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে রেললাইনের পাশে ফেলে রাখে। পরে তারা প্রচার চালায় যে, ট্রেনে কাটা পড়ে সে মারা গেছে। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।”
ঘটনার পর থেকে ফরহাদের মা নিলুফা বেগম ছেলের জন্য বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “ফরহাদ বাড়ি থেকে বিকেলে বের হল। রাতে শুনি আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। হামজার নেতৃত্বে এ কাজ করেছে সন্ত্রাসীরা।”
স্থানীয়রা জানান, হামজা নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের কর্মী।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, “আমি নির্বাচনের পর ভোটারদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে বের হয়েছিলাম। রাত সাড়ে ৯টার দিকে জানতে পারি একটি ছেলেকে কে বা কারা মেরেছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে আমি বা আমার নেতাকর্মীরা কেউ জড়িত নই। নৌকার প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তাদের এসব অভিযোগ মিথ্যা। আমি প্রকৃত অপরাধীর বিচার চাই।”
আর চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, “আমি শুনেছি রেললাইনের পাশে তাকে রক্তাক্ত আহত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তিনি ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন, নাকি কেউ তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।”