কানাডার ক্যালগেরিতে বাংলাদেশ পূজা পরিষদ অব ক্যালগেরির আয়োজনে বাংলা বছরের শেষ দিনকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করে নিতে গ্রামবাংলার চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈশাখী মেলা উদযাপিত হয়েছে।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ছিল হেনা আর্ট, ফেইস পেন্টিং, বাংলা সংস্কৃতির হরেক রকমের খাবার ও বিভিন্ন ধরনের স্টলে ছিল বাহারি রকমের শাড়ি।
মেলায় কোমলমতি শিশু-কিশোরদের জন্য ছিল বিশেষ আয়োজন। প্রবাসী বাঙালিরা নানা রঙে সেজে শোভাযাত্রার মাধ্যমে স্বাগত জানায় নতুন বছরকে। প্রবাসীদের আয়োজন যেন গ্রাাম-গঞ্জের ঘাটে, মাঠে, বয়সী বটের তলায় বর্ণাঢ্য আয়োজনের সেই দিনগুলোর কথাই যেন মনে করিয়ে দেয়।
বিকেলে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠান সমাপ্তি হয়। দীর্ঘ দুই বছর করোনা বিরতির পর প্রবাসীরা যেন নতুন করে জেগে উঠেছিল। গ্রাম বাংলার মতোই তারা নতুন পোশাকে সজ্জিত হয়ে আনন্দে মিলিত হয়েছে একে অপরের সান্নিধ্যে। বিনিময় করছেন কুশলাদি। পরিবার-পরিজনের শিশু-কিশোরদের পদচারণায় পরিণত হয়েছিল এক মিলন মেলার।
মুহূর্তেই বাংলাদেশ সেন্ট্রার পরিণত হয়েছিল একখণ্ড বাংলাদেশে।
চৈত্র সংক্রান্তি অনুষ্ঠানের আয়োজক লীনা বৈরাগী জানান, অনেক দিন পর সবার সঙ্গে মিলিত হয়ে এক অন্য রকম আনন্দ উপভোগ করছি। তাছাড়া ক্যালগেরিতে আমরা প্রথমবারের মতো চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠান করছি। আবহমান বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরাই আমাদের এই অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। আমরা চাই, যেন আমরা আমাদের সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়ে যাই। মা মাটি ও দেশ যেন থাকে আমাদের হৃদয়ে।
অন্যতম আয়োজক প্রনব দাস জানান, শৈশবের চৈত্র সংক্রান্তির মেলা কে খুব মিস করি। হয়তো আর কোনোদিন সেই মেলা ফিরে আসবে না, কিন্তু আমরা চাই আমাদের প্রজন্মের মাঝে আমাদের সংস্কৃতি যেন জীবিত থাকে। ছোটবেলার সেই যাত্রা, সার্কাস, বায়োস্কোপ, পুতুলনাচ, ঘুড়ি ওড়ানো চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা এখানে না থাকলেও দেশ যেন থাকে হৃদয়ে।
হিন্দু পঞ্জিকা মতে, দিনটিকে গণ্য করা হয় মহবিষুব সংক্রান্তি নামে। হিন্দুরা পিতৃপুরুষের তর্পণ করে থাকে, নদীতে বা দিঘীতে পূণ্যস্নান করে থাকে। শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে চৈত্রসংক্রান্তির দিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্মকে পূণ্যজনক বলে মনে করা হয়। ক্যালগেরির প্রবাসী বাঙালিরা অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে চলেছেন তাদের ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে।