
কানাডার ক্যালগেরিতে আগামী ১৬ এপ্রিল বৈশাখী মেলা ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী প্রাণের উৎসব এবং বাংলা সংস্কৃতির ধারক-বাহক পহেলা বৈশাখকে স্মরণীয় করতে নতুন প্রজন্মের মাঝে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরতে ক্যালগেরির ‘আমরা সবাই’ এর আয়োজন করতে যাচ্ছে।
বিশেষ এ আয়োজনকে সফল করতে আয়োজকদের উদ্যোগে ক্যালগেরির ‘বাংলাদেশ সেন্টারে’ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি রুপক দত্ত, সহ-সভাপতি জয়ন্ত বসু, সাধারণ সম্পাদক সৌগত নন্দী, অনুষ্ঠান সমন্বয়কারী সাথী দত্ত, উপদেষ্টা চয়ন দত্ত এবং কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব বিশিষ্ট কলামিস্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান, অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার আলবার্টার প্রথম বাংলা অনলাইন পোর্টাল ‘প্রবাস বাংলা ভয়েস’-এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল।
সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠান সূচি ও লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি রুপক দত্ত। তিনি বলেন, নব প্রজন্মের কাছে আবহমান বাংলার কৃষ্টি ও ইতিহাস-ঐতিহ্যকে তুলে ধরাই বাংলা বর্ষবরণ উৎসবের মূল লক্ষ্য। মেলায় রং বেরংয়ের শাড়ি, ফ্যাশন শো, বাংলার ঐতিহ্যবাহী পুলি পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের স্টল থাকবে। মূল আকর্ষণ থাকবে ছোট ছোট শিশু-কিশোরদের হাতে মুখ ও মুখোশ নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা।
তিনি আরও বলেন, বাংলার সবুজ মাঠ পেরিয়ে বিশ্ব প্রান্তরে পান্তা-ভাতের দেখা না মিললেও ওই দিন বৈশাখের রং, ভালবাসার রং, আড্ডার রং, লোকজ ভাবনা, বাংলার ঐতিহ্য ও আনুষ্ঠানিকতায় একে অপরের সান্নিধ্যে শ্রদ্ধা, ভালবাসা বিনিময়ের মাধ্যমে হৃদয়-মন ভরে উঠবে প্রবাসী জীবনের জয়গানে। আমরা আশা করি ওই দিন শিশু-কিশোর আর নারী-পুরুষের পদভারে কানায় কানায় পূর্ণ হবে মন্টগোমরি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন। তুষার আবৃত্ত কানাডার কর্মময় এক ঘেয়েমি জীবন থেকে বেরিয়ে এসে প্রবাসী বাঙালিরা দিনব্যাপী আনন্দ উৎসবে মেতে উঠবে অন্যরকম এক মিলনমেলায়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনাকালীন গত দু’বছরে আমরা সবাই কমবেশি অনেক স্বজন হারিয়েছি। প্রবাস জীবনের এ কষ্ট এখনো আমাদের বিমর্ষ রাখে, অন্যদিকে হতাশা বঞ্চিত কর্মময় প্রবাস জীবনে একটু নির্মল আনন্দ পেতেই প্রবাসীরা বেরিয়ে আসবে, উপভোগ করবে বাংলার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে- এটাই আমার বিশ্বাস।
সংগঠনের সহ-সভাপতি জয়ন্ত বসু বলেন, আমাদের রয়েছে সুন্দর একটি সংস্কৃতি যে বলয়ে আমরা বেড়ে উঠেছি। আমাদের সেই ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নবপ্রজন্মের কাছে আমরা তুলে ধরতে চাই। সেই রমনার বটমূলের এক খণ্ড বাংলাদেশকে এখানে তুলে ধরব- এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৌগত নন্দী বলেন, আসছে নতুন বছর আমাদের সবার জীবনে আনন্দ আর অনাবিল শান্তি বয়ে আনবে, করোনামুক্ত হয়ে সারা বিশ্ব নতুন করে জেগে উঠবে। আমরা সবাই একত্রিত হয়ে এখানে বাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরব।
অনুষ্ঠান সমন্বয়কারী সাথী দত্ত বলেন, বাংলা সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে ওই দিন আমরা বিভিন্ন রকমের বাহারি খাবার পরিবেশন করব।আসুন সবাই মিলে উপভোগ করি, নতুন বছরকে বরণ করে নিই।
কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব বিশিষ্ট কলামিস্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, একটি দেশের কৃষ্টি ও কালচার হলো সেই দেশের ধারক ও বাহক। ‘আমরা সবাই’-এর এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রবাসে দেশের ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করবে। এ অনুষ্ঠান থেকে নতুন প্রজন্ম জানবে ও শিখবে আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে। শুভক্ষণের অপেক্ষায় আমরা।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানটির মিডিয়া পার্টনার আলবার্টার প্রথম বাংলা অনলাইন পোর্টাল ‘প্রবাস বাংলা ভয়েস।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি সঙ্গীত পরিবেশন করবেন কলকাতার জি বাংলা সা-রে-গা-মা-খ্যাত প্রখ্যাত শিল্পী ঐন্দ্রিলা দাস। তার সঙ্গীত পরিবেশনায় ফুটে উঠবে বাংলার রূপ, প্রকৃতি, ভালোবাসা ও নির্মল আনন্দ। প্রবাস জীবনে বাঙ্গালীদের মাঝে এই আয়োজন মনের খোরাক ও নির্মল আনন্দ দিতে শতভাগ সফল হবে- এমনটাই মনে করছেন সংগঠকরা।
সংলাপ-২৩/০৩/০০৩/আ/আ