বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মেলেনি আমিরাতের অনুমতি, আশ্বাসে দুই সপ্তাহ পার

করোনা টেস্ট ল্যাব চালুর অপেক্ষা কাটেনি

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ২:৩০ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ২:৩০ পূর্বাহ্ণ
করোনা টেস্ট ল্যাব চালুর অপেক্ষা কাটেনি

কাল হবে, পরশু হবে-এমন আশ্বাসে দুই সপ্তাহ পার হলেও বিমানবন্দরে বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষা শুরু হয়নি। সবশেষ বলা হয়েছিল ২৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতগামীদের র‌্যাপিড টেস্ট শুরু হবে। তবে সোমবার রাতে জানা গেলো, মঙ্গলবার থেকেও টেস্ট শুরু হবে না। কারণ, আমিরাতের অনুমতি মেলেনি। খবর সমকালের।

আমিরাতের অনুমতি পাওয়ার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল বেবিচক) কর্তৃপক্ষ।

বেবিচক চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরে প্রবাসী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার জন্য বিমানবন্দরে স্থাপিত আরটি-পিসিআর ল্যাব প্রস্তুত রয়েছে। ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার ফলাফলও ভাল আছে।

চেয়ারম্যান বলেছেন, পরীক্ষা শুরু করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও অনুমতি দিয়েছে। মঙ্গলবার থেকে করোনা পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। আমিরাতের অনুমতির বিষয়ে দুই দেশ জোরালোভাবে কাজ করছে। ঢাকাস্থ আমিরাত দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।

বিমান উড্ডয়নের সর্বোচ্চ ছয় ঘণ্টা আগে করোনার র‌্যাপিড টেস্ট করার শর্ত দিয়েছে আমিরাত। এ কারণে গত মে থেকে দেশটিতে কর্মরত প্রবাসীরা যেতে পারছে না। তাদের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ হাজার। গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে দুই তিন দিনের মধ্যে ল্যাব স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদও সেদিন জানিয়েছিলেন দুই তিন দিনের মধ্যে ল্যাব বসবে।

কিন্তু ল্যাব বাছাইয়ে সমন্বয়হীনতা ও বারবার সিদ্ধান্ত বদল, টানাপোড়েন এবং একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার চেষ্টায় ২০ দিন চলে যায়। ৬ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কারিগরি কমিটি সাতটি প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করে ল্যাব স্থাপনের অনুমতি দিতে। কিন্তু পরের দিন এই তালিকা থেকে থেকে তিনটি প্রতিষ্ঠান বাদ পরে। সংযুক্ত হয় বাছাইয়ের সময় পর্যাপ্ত তথ্য না দেওয়া তিন প্রতিষ্ঠান। সাতটির মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান ল্যাব স্থাপন করেছে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে। পার্কিং ভবনের ছাদে স্থায়ী ল্যাব স্থাপনে আরো সময় লাগবে।

গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ল্যাব পরিদর্শন করে জানিয়েছিলেন, শনিবার থেকে টেস্ট শুরু হবে। পরের দিন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী পরিদর্শন করে একই কথা জানান। কিন্তু শনিবার টেস্ট শুরু হয়নি ল্যাবের সক্ষমতা যাচাই না হওয়ায়। বলা হয়েছিল রোববার থেকে টেস্ট শুরু হবে। ওই দিন বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী জানান, মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, অনুমতি পাওয়া সাত প্রতিষ্ঠানের ছয়টি বেবিচকের কাছে স্ট্যান্ডার্ড অপরাটেরিং প্রসিজার (এসওপি) জমা দেয় গত ১৭ সেপ্টেম্বর। যা আবর আমিরাতে পাঠানো হয়েছে। কোন কোন প্রতিষ্ঠান আরব আমিরাতের শর্তানুযায়ী করোনা পরীক্ষায় সক্ষম-তা জানতেই এসওপি দেশটিতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বেবিচক। কিন্তু ১০ দিনে এ বিষয়ে কোনো মতামত জানায়নি আমিরাত। এ যুক্তিতেই টেস্ট শুরু যাচ্ছে না।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এসওপি আমিরাতে পাঠানোর প্রয়োজন ছিল না। দেশটি এসওপি চায়নি। শুধুশুধু তা পাঠিয়ে সময় ক্ষেপন করা হচ্ছে। যাতে একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান ‘লাভবান’ হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ছয়টি প্রতিষ্ঠানের একটি গত মাসে মন্ত্রণালয়ে কাজ চেয়ে আবেদন করার সময়ই আমিরাত দূতাবাসের প্রত্যায়ন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানটি আগেই আমিরাতের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে। সূত্রের খবর, সেই প্রতিষ্ঠানটিকে এককভাবে করোনা পরীক্ষার কাজ দেওয়ার ‘চাপ’ ছিল। বর্তমানে শুধু তারাই পরীক্ষামূলক করোনা পরীক্ষা করছে। তাদের ল্যাব থেকে পরীক্ষা সনদ নিয়ে গত কয়েকদিনে শ’ খানেক কর্মী আমিরাত গিয়েছেন। মঙ্গলবারও তাদের পরীক্ষা করা যাত্রীরা আমিরাত যাবেন। বাকি পাঁচ প্রতিষ্ঠান ল্যাব স্থাপন করলেও, তারা পরীক্ষা করতে পারছে না।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেছেন, মহামারিতে বাংলাদেশে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, অন্য দেশ তা প্রশংসিত হয়েছে। প্রবাসীদের ফেরত পাঠানোর চাপ ছিল, আমরা তা মোকাবিলা করেছি। আমরা বিমানবন্দরে যে ব্যবস্থা নিয়েছি, সংক্রমণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বাছাই করা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনুমতিপ্রাপ্ত একটি ল্যাব রয়েছে বিমানবন্দরে। তাদের পরীক্ষা করা ৭০ জন যাত্রী সোমবার রাতে দুবাই গিয়েছেন। মঙ্গলবার দুবাইগামী আরও একটি ফ্লাইটের প্রবাসী যাত্রীরা এ ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করে গন্তব্যে যাবে।

সম্পর্কিত পোস্ট