ইনজুরিগ্রস্ত দল। ছিলেন না দলের প্রাণভোমরা নেইমার। আবার সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে জয় না পাওয়ার সমীকরণও চোখ পাকাচ্ছিল পুরোদমে। নানা শঙ্কা চেপে ধরেছিল সেলেকাও শিবিরে। প্রথমার্ধ গোলশূন্য।
দ্বিতীয়ার্ধে ভিনিসিউসের গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হওয়া পর ব্রাজিল ভক্তরা ছিল চরম হতাশায়। শেষ পর্যন্ত সেলেকাওদের মুখে হাসি ফোটান ক্যাসেমিরো। তার করা একমাত্র গোলেই সুইস গেরো কাটিয়ে কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে পৌঁছে গেছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল (১-০)।
জি গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারায় ব্রাজিল। এবার সুইসদের হারালো ১-০ গোলে। বিশ্বকাপে সুইসদের না হারানোর গেরোটা এবার ছোটাতে পারল সেলেকাওরা। এর আগে বিশ্বকাপে দুইবার ব্রাজিলের সঙ্গে ড্র করেছিল সুইজারল্যান্ড (১৯৫০ ও ২০১৮ বিশ্বকাপে)।
সোমবার দোহার ৯৭৪ স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই বল পজিশনে এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। কিন্তু সুইসদের জমাট রক্ষণাভাগে ফাটল ধরাতে পারছিল না রিচার্লিসনরা। ১২ মিনিটে ক্ষিপ্রগতিতে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে দারুণ পাস দিয়েছিলেন রিচার্লিসন, কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি ভিনিসিউস জুনিয়র।
২৬ মিনিটে গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন ভিনিসিউস। বক্সের ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ান রাফিনহা। দারুণ জায়গা বল পেয়েছিলেন ভিনিসিউস। সামনে ছিলেন শুধু সুইজারল্যান্ডের গোলরক্ষক ইয়ান সোমার। তবে ভিনিসিউসের শট সরাসরি চলে যায় গোলরক্ষের দিকে। হতাশ হয় সেলেকাওরা।
৩১ মিনিটে বক্সের একটু বাইরে থেকে বুলেট গতির শট হাকান রাফিনহা। এবারও তার প্রতিহত করেন ইয়ান সোমার। প্রথমার্ধের শেষে কর্নার থেকে গোলের সুযোগ পায় ব্রাজিল। রাফিনহার ক্রসে গোলের পরিস্থিতি তৈরি হলেও তাতে পূর্ণতা পায়নি। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থায়।
প্রথমার্ধে ব্রাজিলের ৬টি শটের মধ্যে দুটি ছিল লক্ষ্যে। সুইজারল্যান্ড একটি শট নিতে পারলেও তা ছিল লক্ষ্যের বাইরে। প্রথমার্ধে ব্রাজিল কর্নার আদায় করে ৪টি। সুইজারল্যান্ড দুটি।
দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম আক্রমণ সুইজারল্যান্ডের। বাঁ প্রান্ত থেকে ডান প্রান্তে ভারগাসের উদ্দেশে বল বাড়ান জাকা। ভারগাস সেই বল ধরে বক্সে পাঠান। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের কোনও ফুটবলার বল পাওয়ার আগেই বিপদমুক্ত করেন ব্রাজিল অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা।
৫৬ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে ব্রাজিল। বাঁ প্রান্ত থেকে ভিনিসিউসের নিখুত ক্রস। রিচার্লিসন পা ঠেকাতে পারলেই হতো গোল হত। কিন্তু পারেননি তিনি। আফসোসে পুড়ে ব্রাজিল ভক্তরা।
৬৪ মিনিটে গোল পেয়েছিল ব্রাজিল। রেফারিও দিয়েছিলেন গোলের বাঁশি। তবে ভার প্রযুক্তির সাহায্যে বাতিল হয় সেই গোল। আক্রমণ তৈরি করার সময় অফসাইডে ছিলেন রিচার্লিসন। সেই কারণে ভিনিসিউসের দুরন্ত গোল বাতিল হয়ে যায়।
৮৩ মিনিট অবশেষে গোলের দেখা পায় ব্রাজিল। বাঁ প্রান্ত ধরে ভিনিসিউস-রদ্রিগো যুগলবন্দিতে বক্সের মধ্যে বল পান কাসেমিরো। ডান পায়ে জোরালো শট মারেন তিনি। সুইজারল্যান্ডের ডিফেন্ডারের শরীরে হালকা লেগে সেই বল জালে জড়িয়ে যায়। কিছু করার ছিল না সুইস গোলরক্ষক সোমারের। শেষের দিকে গোল ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টায় মরিয়া ছিল ব্রাজিল। কিন্তু গোল আর হয়নি। নেইমারহীন ব্রাজিল মাঠ ছাড়ে তৃপ্তির জয় নিয়ে।
জি গ্রুপে টানা দুই জয়ে নক আউট পর্বে গেল ব্রাজিল (৬ পয়েন্ট)। দুই ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে সুইজারল্যান্ড। ক্যামেরুন ও সার্বিয়ার পয়েন্ট সমান ১। ২ ডিসেম্বর রাত ১ টায় ব্রাজিল শেষ ম্যাচ খেলবে ক্যামেরুনের সঙ্গে।