পবিত্র রমজান মাসে বাংলাদেশের চিরচেনা চিত্র যেমন মসজিদে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়, হোটেল রেস্টুরেন্টে ইফতারির সমারোহ এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ইফতার পার্টির আয়োজন পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের কেন্দ্র বিন্দুতে অবস্থিত বাংলাদেশ অধ্যুষিত রাস্তা রুয়া দো বেনফরমোজোতেও। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এলাকাটি ঘিরে।
বাংলাদেশী অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে দুটি মসজিদে মুসল্লিদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ। যদিও গত সপ্তাহে আরও একটি নতুন মসজিদ যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে। তারপরও মুসল্লিদের ঠাঁই হচ্ছে না। তাছাড়া এই তিনটি মসজিদে প্রতিদিন সাত থেকে আটশ মুসল্লি একসঙ্গে ইফতার করেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসল্লি তারাবি নামাজও জামাতে আদায় করেন।
দুপুর গড়াতেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টগুলো বাহারি ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসে। রাজধানী লিসবনের বিভিন্ন স্থান থেকে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের মুসলিম তথা স্থানীয় নাগরিকরাও ইফতার সামগ্রী ক্রয় করেন।
প্রবাসী বাংলাদেশি হারুন বলেন, ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু ছাড়া আমাদের ইফতার তো অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সময়ের অভাবে ঘরে তৈরি করতে না পেরে ইফতার কিনছি। প্রায় প্রতিদিনই কাজ শেষে ইফতার সামগ্রী কিনে নিয়ে যাই। তাছাড়া রমজানে ইফতার সামগ্রী কেনার মধ্যেও এক ধরনের আনন্দ রয়েছে।
বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের আয়োজনে প্রতিদিনই বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টগুলোতে ইফতার মাহফিল আয়োজিত হচ্ছে। স্থানীয় প্রবাসী সংগঠনগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে স্থানীয় এবং কমিউনিটি ব্যক্তিদের সম্মানে ইফতার পার্টির আয়োজন করছে। সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোয় রেস্টুরেন্টগুলোতে নতুন করে ইফতার পার্টির বুকিং করা হচ্ছে।
বাংলাদেশি খাদ্য পণ্যের স্টোরগুলোতেও অতিরিক্ত ক্রয়-বিক্রয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকেই সেহরি ইফতারের বাড়তি আয়োজনের জন্য স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অতিরিক্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয় করছেন। বর্তমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধাবস্থায় পণ্যের ঊর্ধ্ব মূল্য প্রতিবন্ধকতা হতে পারছে না।
শত শত মাইল দূরে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বাঙালিয়ানা এবং ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করোনা মহামারি দুই বছর থামিয়ে রাখলেও এর প্রভাব কমে যাওয়ায় রমজান মাসের আগমনে আবারও উৎসব ফিরে এসেছে পর্তুগাল প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে।