মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১

উপনেতার পদ থেকে জি এম কাদেরকে সরাতে চিঠি দিচ্ছেন রওশন

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২২ | ৬:৪০ অপরাহ্ণ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২২ | ৬:৪০ অপরাহ্ণ
উপনেতার পদ থেকে জি এম কাদেরকে সরাতে চিঠি দিচ্ছেন রওশন

বিরোধীদলের উপনেতার পদ থেকে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব যাচ্ছে স্পিকারের কাছে। বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এই প্রস্তাব পাঠাচ্ছেন। ইতোমধ্যে চিঠিও তৈরি হয়েছে। রওশনপন্থি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

আগামী ২৬ নভেম্বর পার্টির কাউন্সিল আহবানের ঘটনা কেন্দ্র করে দলের সংসদ সদস্য ও প্রেসিডিয়াম মেম্বাররা একত্র হয়ে রওশকে বাদ দিয়ে জি এম কাদেরকে বিরোধীদলের নেতা করতে গত ১ সেপ্টেম্বর স্পিকারের কাছে চিঠি দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলের নেতা রওশন এরশাদ স্পিকারের কাছে পাঠানো চিঠিতে জাতীয় সংসদের উপনেতা পদে ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদের নাম প্রস্তাব করেছেন।

জাপার একাধিক নেতা জানান, দলীয় সংসদ সদস্যরা রওশন এরশাদকে তার পদ থেকে সরিয়ে চিঠি দিলেও এ ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর। তবে দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কোনো সিদ্ধান্ত নিলে স্পিকার সাধারণত সেটি অনুমোদন করেন।

এক্ষেত্রে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদকে তার পদ থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়াটি বিধি অনুযায়ী হয়নি। ওখানে তিনটি ভুল রয়েছে। প্রথমত, সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়েছে সেই চিঠির এজেন্ডায় বিরোধীদলের নেতাকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ ছিল না। দ্বিতীয়ত, বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন উপনেতা জি এম কাদের। তিনি ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি। তৃতীয়ত, স্পিকারের কাছে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে সেখানে স্বাক্ষর দিয়েছেন চিফ হুইপ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, বিরোধীদলের চিফ হুইপ ইতোমধ্যে স্পিকারের কাছে যে চিঠি দিয়েছিলেন তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। পরবর্তীতে জি এম কাদের বেগম রওশন এরশাদকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আরেকটি চিঠি দেন।

এসব বিষয় নিয়ে সম্প্রতি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিরোধীদলের নেতাকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে যে চিঠি দিয়েছে, তা আমার কাছে পেন্ডিং আছে। বিধিবিধান যাচাইবাছাই করে দেখা হচ্ছে।’

সংশ্লিষ্টরা জানান, দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের সঙ্গে জি এম কাদেরের দ্বন্দ্ব পুরোনো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নানা বৈঠকে দুজনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তিন বছর আগে এরশাদের মৃত্যুর পর দলের কর্তৃত্ব নিয়ে কাদের ও রওশনের বিরোধে দলটি ভাঙনের মুখে পড়েছিল। তখন সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে সমঝোতা হয়। সেই সমঝোতায় রওশনকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পাশাপাশি দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষকের পদ দেওয়া হয়। আর কাদের দলের চেয়ারম্যানের পদ রাখার পাশাপাশি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা হন।

অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন বিদেশে থাকা রওশন গত বছর দেশে ফিরে দল নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। দল পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগ ও সিনিয়র অনেক নেতাকে পদ না দেওয়ায় রওশনপন্থিরা আগামী নভেম্বর মাসে দলের কাউন্সিল ডেকেছেন। কাউন্সিল ঘোষণার চিঠিতেও স্বাক্ষর করেন এরশাদপত্নী রওশন। এ নিয়ে দলটির মধ্যে বিভাজন আরও তীব্র হয়, ঘটনা ঘটে বহিষ্কার ও পাল্টা বহিষ্কারের। সবমিলিয়ে হযবরল অবস্থায় চলছে জাপা। তবে জি এম কাদেরের অনুসারীররা বলছেন, তৃতীয় পক্ষ নিজেদের স্বার্থে রওশনকে ভুল পথে পরিচালনা করছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট